সাউথ জার্সীতে চিহ্নিত জামাত-শিবির বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ কমিটি গঠনের দাবি
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২৯ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজার্সি (যুক্তরাষ্ট্র) সংবাদদাতা
সাউথ জার্সি মেট্রো আওয়ামী লীগের এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১০ সেপ্টম্বর আটলান্টিক সিটিতে বাংলাদেশ কমিউনিটি সেন্টারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আবদুর রফিক। সভায় উপস্থিত বক্তারা মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমরান ভূইয়ার সাম্প্রতিক আ’লীগ বিরোধী কার্যকলাপের নিন্দা জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এমরান ভূঁইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ না করতে সকলের প্রতি অনুরোধও বক্তারা। যা বহিস্কার তুল্য বলে সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় উল্লেখ করা হয়, এক সময় আটলান্টিক সিটিতে বাংলদেশিরা সংখ্যায় কম থাকায় ছিলো না কমিটি। তবে সে সময়েও সংগঠনের নিয়মিত কর্মকাণ্ড চলতো। ২০০৮ সালে স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের নির্বাচনে হেরে যাওয়া একটি গ্রুপ ও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিবির নেতা নিয়মিত এখানে জামায়াতে ইসলামীদের সাথে সব আ’লীগ বিরোধী কাজে লিপ্ত ছিলো। অতঃপর সেই লোকই কাউকে না জানিয়ে এমরান ভূঁইয়াকে নিয়ে নিউইয়র্কের এক ব্যাবসায়ির সুপারিশে আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে আসে। এতে সবাই বিক্ষুব্ধ হয়। পরবর্তীতে ডাকলেও জামায়াতে ইসলামীদের কমিটিতে না যেয়ে তারা নিজেরাই প্রকৃত আ’লীগারদের নিয়ে কমিটি গঠন করে। কোন অসুবিধা ছাড়াই এখনও কমিটির সব কাজকর্ম সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে।
অপরদিকে, কমিটি গঠণের দিন অনুপ্রবেশকারী স্বেচ্ছায় শিবির সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করলে আগত নেতৃবৃন্দ হতাশা প্রকাশ করেন। তখন তাকে ৭২ নং শেষ সদস্য করা হয় শর্ত সাপেক্ষে। তার লোকাল রাজনীতিতে শিরির সংশ্লিষ্টতার কথা জানাতে বাদ পড়ার আশংঙ্কায় সে শিবিরের কথা স্বীকার করে। প্রথম দিকে নানাভাবে সে বুঝাতে চেয়েছিল সে জমাত ছেড়েছে। সবাই মিলে তখন আরবি শিক্ষালয় চালু করে সেও সম্পৃক্ত করে নিজকে। নিজেদের সন্তানদের যাতে মৌলবাদের শিক্ষা থেকে বাঁচানো যায় এটাই ছিল লক্ষ। স্বতস্ফূর্তভাবে আলাদা ঈদের জামাতেও সে যোগ দেয়। কিন্তু আস্তে আস্তে তার মুখোশ উন্মোচিত হতে থাকে।
নুতন কমিটিকে সে জামাতি ভাবধারায় চালাতে সচেষ্ট হয়। এতে তখনকার সভাপতি ও সেক্রেটারী আসকারা পায়। যেহেতু ইতোমধ্যে আলাদা একট সামাজিক সংগঠন তারা তৈরী করেছে সেখানে এক সঙ্গে কাজ করে তারা। আ’লীগকে সে যত্রতত্র ব্যাবহার করতে চায়। সবার থেকে নিয়মিত চাঁদা নিলেও কোন কারণ ছাড়াই কাউকে না জানিয়ে এমরানের সহযোগীতায় আরবী স্কুল বন্ধ করা হয়। একই সঙ্গে বন্ধ করা হয় ঈদ উপলক্ষে আলাদা স্বতফুর্ত ঈদ জামাত।
আ’লীগের মিটিং এ দলাদলির কথা বলে সেখানে জামাতি বিএনপির লোকদের আনা হত। কাউকে জমাত বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলতে বারন করা হত। যারা বলতে চাইত তাদের আলোচনায় নাম রখা হত না। এতে দিন দিন প্রকৃত আ.লীগাররা ক্ষিপ্ত হতে থাকে।
একদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষীকিতে স্থানীয় একটি হোটেলে আলোচনা সভায় ঘোষনা করা হলো একজনকে সহসভাপতির নাম যে নাকি বক্তব্য দিবে। এর আগে সবাই তাকে আ’লীগ বিরোধী বলেই চিনত। সে বক্তব্যের শুরুতে বলতে থাকেন তিনি সব জানেন, জিয়া তার সম্মুখে পটিয়ায় ড্রামের উপর দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা ঘোষনা করেছেন। আলোচনা সভাটা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে ।
এরপর সে অনর্গল বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে থাকেন। সে বলে ‘বঙ্গবন্ধু দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন, জুলুম নির্যাতন চালিয়েছেন, তিনি আমাদের আত্মার অভিশাপ থেকে মারা গেছেন’ ইত্যাদি ইত্যাদি। সবাই তার উপর ক্ষিপ্ত হলে অনুপ্রবেশকারী স্টেজে এসে তাকে বক্তব্য চালিয়ে যেতে বলেন। পরে জবাব দেয়া হবে বলেন। এতে সে সাহস পেয়ে বলেন আমি সুযোগ পেয়েছি সব বলব। ইতোমধ্যে প্রায় সভায় অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। কিন্ত তারপর এটাকে ধাপাচাপা দিতে সচেষ্ট হয় অনুপ্রবেশকারী। কিন্ত সে থেকে দ্বিতীয় বিভক্তি শুরু হয় ।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষীকি উপলক্ষে আলোচনা সভায় তৎকালীন সিনিয়র সহসভাপতি জিরাজ ভূইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধুকে গালি দেয়। সেদিন যুক্তরাষ্ট্র আ’লীগের সভাপতি ড.সিদ্দিকুর রহমান, নিজাম চৌধুরী সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। কারো চোখেই এটা বিরুপ মনে না হলেও ।ত শিবিরীর অনুপ্রবেশকারী পরদিন সবাইকে ক্ষেভের সাথে এর নিন্দা জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন। ডাকা হয় জরুরী সভা। সিরাজ ভূইয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয় এই কথা বলার জন্য। এখানেই শেষ নয় সবার উপস্থিতিতে ওনাকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। কান্নারত অবস্থায় তিনি তার মামা এমরান ভূইয়ার সহয়তা চাইলে সে ক্ষমা চাইতে বলেন। ক্ষমা চেয়ে তিনি কান্নারত অবস্থায় বাড়ি যান। সেদিন বুঝা যায়নি এটাকি আওয়ামী লীগ না জামাত।
এসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র আ’লীগের সভাপতি ড.সিদ্দিকুর রহমানকে জানানো হলেও কোন কাজ হয়নি। বার বার জানানো হয়েছে। এমন কি সাংবাদিক সম্মেনন করাতে তিনি আমাদের প্রতি বিরাগ ভাজন হয়েছেন। তিনি সামনা সামনি আমাদের পক্ষে দেখালেও অজ্ঞাত কারনে কোন কিছুতেই কাজ হয়নি। এর মধ্যে ভোটের মাধ্যমে কমিটি করার কথায় সবাই সায় দিয়ে মেম্বার বানিয়েও কোন কাজ হয়নি।সর্বোচ্চ ৮০ জনের মতামতকে উপেক্ষা করে ৪০ জনের কম ভোটারকে পাধান্য দিয় পর দিন ১৮ জনের আজগুবী কমিটি করা হয়। । যেখানে ড, সিদ্দিকুর রহমান নিজে বলেন আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সব ভুল ত্রুটি শুদ্ধ করে পূর্নাংগ কমিটি করা হবে ।যা আজ পাচ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি।
আঠারো জনের কমিটিতে কে কোত্থেকে এলো কেও জানেনা। দুএক জন সমাজিক ভাবে ঘৃনীত পদবি লিপ্সু থাকলেও সে কমিটি এখন ভেংগে চুরমার , কোন কার্যক্রম নেই। । উল্লেক্ষ্য এমরান ভুইয়া প্রথম চোরা কমিটির কারনে অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে উপরে উপরে অবস্থান দেখিয়ে সেক্রেটারীর পদবি বাগিয়ে নেয়। এটা যে অনুপ্রবেশকারীর ইচ্ছায় হয়েছে তা সকলের কাছে এখন পরিষ্কার। প্রকৃত আ’লীগার প্রায় সবাই বাদ। বাদ পরেছেন মুক্তি যোদ্ধা যিনি যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে সরাসরি এফ বি আই এ অভিযোগ করার কারনে একইদিন একাধিক মিটিং স্থগিত করে মীর কাশেম আলী বাংলাদেশে যেতে বাধ্য হয়ছে। এটা নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় হয়েছে। কিন্ত তাকে বাদ দিলেন কেন কে কাকে জবাব দিবে। মনে হয় যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে যাওয়ার শাস্তি।
ইতিমধ্যে এমরন সাহেব কমিটি আনার জন্য মরিয়া।বর্তমানে শেষ কমিটেতে কেউ আসেনা ১৮ জনের কমিটিতে নানা নাটক যুদ্ধ চলে ও চলছে। বহিস্কার সহ মারামারি সব সেখানে । তারা আবার পদ পদবি দিতে বলে নুতন কমিটি আনার চেষ্টায় আছে। ঢূকানোর চেষ্টা করছে সাবেক শিবির নেতাকে।
উল্লেখ্য, প্রথম চোরা কমিটির পর থেকে নানা ভাবে আমাদের চেষ্টায় অনুপ্রবেশকারীকে আর কমিটিতে নাম রাখা হয়নি। সে কমিটেতে না থাকলে যে সকল নেতা হয় প্রায় সবাই নানা ভাবে আসা তার লোক । ড. সিদ্দিকুর রহমানের পূর্ন সময় পূর্নাংগ কমিটি হয়নি শুধু মানুষের বিরোধীতায় সাবেক শিবির নেতাকে ঢুকানো যায়নি অনেকেই তাই মনে করেন। এখন লক্ষ্য পর্দার অন্তরাল থেকে তাকে প্রকাশ্য কমিটিতে আনার চেষ্টা চলছে। এখন এমরান ভুইয়া সকলের সাথে বেইমানী করে তাকে নিয়ে সকলকে বাদ দিয়ে ভুয়া কমিটি আনতে চেষ্টা করছে বলে গুঞ্জন আছে।
কমিটির পদপদবি পেতে হাজার হাজার টাকা চাওয়ার কথা শুনা যায়। এখন বিরট অংকের লেনদেনের কথাশুনা যাচ্ছে। লেনদেনের মাধ্যমে এমরান ভুইয়া একাজ করছেন বলে জানা যায় । সব কিছু জানানো হলেও ড,সিদ্দিকুর রহমান সাহেব অনুপ্রবেশ কারীর জন্য দেশের প্রধান মন্ত্রির দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দপ্তরের সুপারিশের কথা বলেন সব সময়। অভিযোগ তদন্ত যাচাই বাছাই কোন দিন হয়নি । এমন কি এক বার প্রধানমন্ত্রীর সফর সংগী সাংবাদিক সৈয়দ শুকুর আলী। শুভ তখনকার রিপোরটার্স ইউনিটির সেক্রেটারী ও সমকালের তখনকার সিনিয়ার রিপোর্টার ফাসিউ উদ্দিন মাহতা্ব যুক্তরাষ্ট্র আ’লীগ সভাপতিকে অনুপ্রবেশকারীর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ফোনে তিনি চট্রগ্রামের আমিনুর রহমান আমিন ভাইয়ের(কেন্দ্রীয় নেতা) সুপারিশের কথা বলে তার ব্যাপারে অপারগতার কথা জানান। তারা সাথে সাথে আমিনুল ইসলাম আমিন ভাইকে ফোন দিলে তিনি ক্ষোভের সাথে তা অস্বিকার করেন। তাকে জিজ্ঞেস করবে বলে জানান।
ইতিমধ্যে এমরান ভুইয়া ঐক্যের বাপারে কথা বলতে এসে বলেন, “শহীদ খান শিবির করেন এটা সবাই জানে” । কমিট গঠনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ কত্রিক আমাদের ব্লাব দেয়া হয়েছে। ইত্যদি। তার পরেও সে আ’লীগকে শিবির নেতার হাতে তুলে দিতে তৎপর । এরপর আহুত সভায় উপস্থিত সবার এককথা শিবিরের অনুপ্রবেশকারীকে বাদ দিয়ে কমিটি করতে হবে। যে ভাবে যে পক্রিয়ায় হয় আমরা রাজি। বিশাল লেনদেনের মাধ্যমে যে কমিটে আনার চেষ্টা চলছে সেই, রকম কিছু অনুমোদন না দিতে আ’লীগের সভাপতি ড, সিদ্দিকুর রহমানকে অনুরোধ জানানো হয়।