বাংলাদেশের কোন একটি প্লাটফর্মে এটিই সিডনি প্রবাসী ঔপন্যাসিক আরিফুর রহমানের প্রথম পুরস্কার।
গতকাল ২২ ডিসেম্বরে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এক জাঁকজমক অনুষ্ঠানে অনলাইন বুক সেলার পোর্টাল বইফেরী তাদের দ্বিতীয় জন্মোৎসব অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গতবছরের বেস্টসেলার লেখক, বই এবং প্রকাশকদের পুরস্কার প্রদান করে। সৃজনশীল বিভাগে বেস্টসেলার বইয়ের পুরস্কারে ভূষিত হয় আরিফুর রহমানের সপ্তম উপন্যাস ‘আমাদের ঠিকানা বদলে গেছে’। সিডনি প্রবাসী লেখকের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন লেখকের মা এবং বড়ভাই প্রশান্তিকা সম্পাদক আতিকুর রহমান শুভ। কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক লেখকের মায়ের হাতে সম্মাননা স্মারক ও সনদ তুলে দেন। এসময় হলভর্তি দর্শক মুহুর্মুহ করতালি দিয়ে সম্বর্ধিত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আনিসুল হক, বিশেষ অতিথি ছিলেন ছড়াকার ও শিশু একাডেমীর মহাপরিচালক আনজীর লিটন, কথাসাহিত্যিক মোহিত কামাল, লেখক অরুণ কুমার বিশ্বাস এবং ব্যাংকার খুরশীদ আলম। সভাপতি হিসেবে ছিলেন বইফেরী’র কর্ণধার রাশেদুল আলম।
পুরস্কার প্রাপ্তির সংবাদে লেখক আরিফুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশের কোন একটি প্লাটফর্মে এটিই আমার প্রথম পুরস্কার। আমার নিজের ঠিকানা বদলের কারণে নিজের হাতে সেটা নিতে পারলাম না। তবে ঠিকই আমার মা এবং এই মুহূর্তে বাংলাদেশে থাকা বড়ভাই আতিকুর রহমান আমার পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। আহা, এমন একটি অনুষ্ঠানে যদি থাকতে পারতাম। প্রিয় পাঠক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। প্রবাসে থেকে লেখালেখি করে এমন একটি সম্মাননা পাওয়া আমার জন্য সত্যিই বিস্ময়কর। অভূতপূর্ব। আমি ভীষণ আপ্লুত।”
আয়োজকদের অনুরোধে ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্য দেন প্রশান্তিকা সম্পাদক আতিকুর রহমান শুভ। তিনি বলেন, “লেখকের জন্ম সিরাজগঞ্জের নদী বিধৌত অঞ্চলে যেটি একসময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তারপর ঢাকা হয়ে বসবাসের ঠিকানা হয় প্রশান্ত পারের শহর সিডনিতে। সেই হিসেবে আমাদের ঠিকানা বদলে গেছে উপন্যাসটি লেখকের বাস্তব জীবন ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।” তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, পৃথিবী যত বদলাক না কেন আমাদের বারবার সাহিত্যের কাছে ফিরে আসতে হবে। একজন সাহিত্য পড়া মানুষ কখনই এটম বোমার সুইসে হাত দিতে পারবে না। তিনি তাঁর মা উপন্যাসের সারসংক্ষেপ বলেন। এসময় হলভর্তি মানুষ আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে।
অনুষ্ঠানে সৃজনশীল ও মননশীল বিভাগে লেখক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন- মোশতাক আহমেদ, ইকবাল বাহার, লতিফুল ইসলাম শিবলী, ওয়াহিদ তুষার, গাজী মিজানুর রহমান, মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন ফকির। ইসলামিক ও অনুবাদ বিভাগে পেয়েছেন- আরিফ আজাদ, ডা. শামসুল আরেফীন, মিরাজ রহমান, অনীশ দাস অপু, প্রিতম মুজতাহিদ ও এ. এস. এম. রাহাত। আমাদের ঠিকানা বদলে গেছে ছাড়াও সৃজনশীল ও মননশীল বিভাগে পুরস্কার পাওয়া বইয়ের মধ্যে রয়েছে- একজন তারা মিয়া, লাভ ইট অর লিভ ইট, বক্তৃতা দিতে শিখুন, স্বপ্ন ও সফলতা, পাসপোর্ট টু গ্রামার।
আরিফুর রহমান এখন লিখছেন তাঁর পরবর্তী উপন্যাস- সাউদার্ন ভ্যালি ওয়ে। এটি প্রকাশ করছে বাংলাদেশের নামকরা প্রকাশনী সংস্থা অন্বেষা প্রকাশন।