ডাম কাপ-আপ প্রকল্পের অগ্রগতি অবহিত প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত 

শহর এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ ও প্রকল্পের অগ্রগতি স্টেকহোল্ডারদের জানানোর লক্ষ্যে ডাম কাপ-আপ প্রকল্পের অগ্রগতি অবহিত প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৩১ মে) ডামের প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

ডামের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. কাজী শরিফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো পরিচালক (যুগ্ম সচিব), অ্যাডমিন, ফাইন্যান্স, ইমপ্লিমেন্টেশন মুহাম্মদ নুরুজ্জামান শরীফ, এনডিসি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডামের জেনারেল সেক্রেটারি ইঞ্জি. এ.এফ.এম গোলাম শরফুদ্দিন এবং নির্বাহী পরিচালক মো. সাজেদুল কাইয়ুম দুলাল। 

অনুষ্ঠানে তাৎপর্য, প্রকল্পের সার্বিক রুপরেখা ও অনুষ্ঠানে আগত সকলকে স্বাগত জানিয়ে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ডাম শিক্ষা সেক্টরের জয়েন্ট ডিরেক্টর এডুকেশন এন্ড টিভিইটি মো. মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্যের পরে প্রকল্পের উপর উপস্থাপনা করেন প্রকল্পের মনিটরিং ও ইভ্যালুয়েশন কোঅরডিনেটর শেখ শফিকুর রহমান। এরপরে অংশ্র্রহণকারীরা একটি মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। 

শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, এনজিও প্রতিনিধি, শিক্ষাকর্মী এবং অভিভাবকগণ প্রকল্পটি ফলপ্রসূ পরিচালনার জন্য তাদের মতামত ও মন্তব্য প্রদান করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডামের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ডাম কাপ-আপ প্রকল্প যে সকল শিক্ষাকেন্দ্রের মাধ্যমে শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রম চলমান রেখেছে তা মানসম্মত। আমাদের মনিটরিং ও সুপারভিশন টিম সঠিকভাবে কাজ করছে। শিক্ষার্থীরা যেন শ্রেণিকক্ষে তার পাঠ সম্পন্ন করতে পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুহাম্মদ নুরুজ্জামান শরীফ বলেন, সুবিধাবঞ্চিত সকল শিশুকে আমরা শিক্ষার আওতায় আনতে চাই। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন বিশ্বের মধ্যে একটি অনন্য সেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্রতিষ্ঠানটি শহরের বস্তি এলাকার শিশুদের গুনগতমান বজায় রেখে উপানুষ্ঠনিক শিক্ষা প্রদান করছে। প্রতিটি শিক্ষাকেন্দ্রে সরকারের পক্ষ থেকে বই প্রদান করা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, সরকারি শিক্ষা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিগণ ডামের কার্যক্রমের প্রতি নজর রাখলে শিক্ষা কার্যক্রম আরো ফলপ্রসু হবে। এই অগ্রগতি অবহিতকরণ সভার আয়োজন করার জন্যে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনকে ধন্যবাদ জানান। 

তিনি বলেন, ঝড়ে পড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে দারিদ্রতা বা আর্থিক অস্বচ্ছলতা। এই দারিদ্রতা দূরীকরণে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিত কর্মসূচির মাধ্যমে কাজ করতে হবে। তিনি বস্তিবাসী দরিদ্র শিক্ষার্থীদেরকে মানবসম্পদ হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই কারিগরি শিক্ষা দেওয়া যায় কিনা এই বিষয়ে বিবেচনা করার করার জন্য অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী শরিফুল আলম তার বক্তব্যে বলেন, প্রকল্পের প্রতিটি বিষয় সবার কাছে স্পষ্ট থাকলে প্রকল্প বাস্তবায়ন সহজতর হয় এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিত হয়। ডাম তার সকল প্রকল্পে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে একটি টেকসই শিখন সমাজ বিনির্মাণ সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস।

সভায় অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডামের কাপ-আপ প্রকল্পের বেসিক এডুকেশন কোঅরডিনেটর, ট্রেনিং কোঅরডিনেটর, ফিল্ড ম্যানেজার, টেকনিক্যাল অফিসারগণ, উপজেলা প্রসাশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন পেশাজীবি সমাজের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা উৎসাহী ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রোগ্রাম অফিসার, রিপোর্টিং এন্ড ডকুমেন্টেশন অফিসার মো. রিজওয়ান আলম। সবশেষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবশেনায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।। 

উল্লেখ্য যে, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের কাপ-আপ প্রকল্প ৫ বছরে ঢাকার মিরপুর, মোহাম্মাদপুর এবং সৈয়দপুরের বস্তি-এলাকার ২৯২৫০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে শিক্ষা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে।