রাজধানীর খিলক্ষেতে বাসার ছাদে নিয়ে তরুণীকে গনধর্ষণ মামলার পলাতক আসামী মাহাদিকে (২২) রাজধানীর বিমানবন্দর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে উপরোক্ত নাম ও ঠিকানা সঠিক প্রকাশ করাসহ ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করে। গ্রেফতার এড়ানোর জন্য সে ডিএমপি ঢাকার বিভিন্ন থানা এলাকায় আত্মগোপন করে আসছিলো।
শনিবার (৬ এপ্রিল) আনুমানিক সাড়ে ৩টার সময় র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুর রহমান জানান, মোসাঃ মুন্নি আক্তার একটি জুতার শোরুমে কাজ করার সময় জনৈক মিরাজ (২২) নামে একজনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়। তাদের প্রেম বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রায় সময় ঝগড়া হতো এবং মিরাজ এর সাথে ঝগড়ার কারণে মিরাজ এর সাথে সম্পর্ক না রাখার জন্য গত ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে মোসাঃ মুন্নি আক্তারের হোয়াটস অ্যাপে সানি (২১) বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে একটি ম্যাসেজ প্রেরণ করেন। মাহাদী (২২) মোসাঃ মুন্নি আক্তারকে সানির সাথে গত ২২ ফেব্রুয়ারি হোয়াটঅ্যাপের ম্যাসেজের ব্যাপারে মিমাংসা করে দিবে বলে খিলক্ষেত আসতে বলে। মাহাদীর কথা মতে মোসাঃ মুন্নি আক্তার একই দিন বিকাল ৫টায় খিলক্ষেত আসে। খিলক্ষেত একটি হোটেলে নাস্তার করার পর খিলক্ষেত থানাধীন রাজউক মার্কেটের সামনে আসে। রাজউক মার্কেটের সামনে আসার পর সেখানে উপস্থিত তানভীর (২২) ও গালিফ (২২) উভয়ে মাহাদীকে সেখান থেকে চলে যেতে বলে। মাহাদী সেখান থেকে চলে গেলে তানভীর ও গালিফ উভয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোসাঃ মুন্নি আক্তারকে জোরপূর্বক একটি রিক্সায় করে অপহরণপূর্বক তানভীরের বাসা নং-খ-১১/১, টনপাড়া, মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান হাফিজের বাড়ির ৫ম তলার বাড়ীর ছাদে নিয়ে দুজন মিলে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য জোর জবরদস্তী করে। তানভীর ও গালিফ পরবর্তীতে উক্ত বাড়ীর ৫ম তলায় একটি রুমে নিয়ে মুন্নিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে মোসাঃ মুন্নি আক্তার কৌশলে তাদের হাত থেকে পালিয়ে তার বোনের বাসায় আশ্রয় নেয়। এরপর মোসাঃ মুন্নি আক্তার তার বোন মোসাঃ মাহফুজা খাতুনকে (২৮) সঙ্গে নিয়ে বিবাদী ১। তানভীর (২২), পিতা-মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান হাফিজ, মাতা- রওশন আক্তার, সাং-বাসা নং-খ-১১/১, টনপাড়া, থানাঃ খিলক্ষেত, ডিএমপি ঢাকা, ২। গালিফ (২২), পিতা-আহম্মদ মোক্তাদির আরিফ সুমন, মাতা-মাসুমা সুলতানা লিমা, স্থায়ী সাং- বাসা নং ক-৪০, ১০ নং রোড, নিকুঞ্জ-২, থানা- খিলক্ষেত, ডিএমপি ঢাকা, ৩। মাহাদী, থানা-খিলক্ষেত, ডিএমপি ঢাকা, ৪। মোঃ সানি (২১), সাং-খিলক্ষেত জামতলা, থানা-খিলক্ষেত, ডিএমপি ঢাকা এর বিরুদ্ধে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ডিএমপি ঢাকার খিলক্ষেত থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন- ২০০০ (সংশোধনী/২০০৩) এর ৭/৯ (১)/৩০ ধারায় (মামলা নং ২৩) মামলাটি রুজু করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে এ পর্যন্ত মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, ধর্ষণকারী, পর্ণোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।