গাজীপুরে ভুয়া র্যাব পরিচয়ে ডাকাতির অন্যতম মূলহোতা মিতুকে রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
শনিবার (৬ জুলাই) রাতের আঁধারে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১ এর আভিযানিক দল সংঘবদ্ধ ডাকাত দলটির অন্যতম প্রধান আসামী দুর্ধর্ষ মহিলা সদস্য মিতুকে গ্রেফতার করেছে।
জানা যায়, গত ৬ জুন ২০২৪ তারিখ বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুরের সেলভো কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানার ৩ নম্বর গেটের সামনে কতিপয় ভুয়া র্যাব পরিচয়ে কারখানার ৩ জন কর্মকর্তাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ ও জিম্মি করে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ও ট্রাক ভাড়ার ১৯ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ছিনতাই করে।
উক্ত ঘটনায় কারখানা কর্তৃকপক্ষ বাদী হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে; যার মামলা নং-১২ তারিখ ৭ জুন ২০২৪। উক্ত ঘটনা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। উক্ত ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
ঘটনার বিবরণ থেকে আরও জানা যায়, ডাকাতদলের নির্ভরযোগ্য সদস্য এই মিতু উক্ত ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ রুবেল ইসলাম এর পূর্বপরিচিত। রুবেলের মাধ্যমেই এই মিতু ডাকাতির কার্যক্রমের সাথে জড়িয়ে পড়ে। কাস্টমার সেজে সে ব্যাংকের ভিতর নজর রাখতো কারা ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা তুলছে এবং তুলনামূলকভাবে সহজ টার্গেট কারা। এভাবে যাচাই-বাছাই করে ব্যাংকের ভেতর থেকেই মিতু টার্গেট মার্ক করত এবং টার্গেট কনফার্ম করে দলের অন্যান্য সদস্যদের ফোন করে বা মেসেজ করে জানাত। পরবর্তীতে টার্গেট ব্যাংক থেকে টাকাসহ বের হলে মিতু ঐ টার্গেটেকে ফলো করে বাইরে আসতো এবং ইশারার মাধ্যমে বাহিরে লুক আউটম্যানকে টার্গেট দেখিয়ে দিত। অত্যন্ত ধূর্ত এই মিতু টার্গেটের কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুনতো এবং টার্গেটের রুট প্ল্যান বোঝার চেষ্টা করত। মূলত মিতুর কাজ ছিল ডাকাতের দলের বাকি সদস্যদের কাছে টার্গেটকে মার্ক করে দেয়া এবং টার্গেটের সম্পর্কে যত বেশি সম্ভব তথ্য সরবরাহ করা।
উল্লেখ্য, এই ডাকাতির ঘটনায় এর আগে গত ১২ জুন আরেকটি অভিযানে র্যাব-১ এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের মূল হোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বহুলভাবে প্রচারিত হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেফতারকৃত মিতু দীর্ঘদিন যাবত এ সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে এই ডাকাতির সাথে এবং সংঘবদ্ধ ডাকাত দলটির সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছে। ডাকাত মিতুকে থানায় সোপর্দ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।