ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রথম স্টিয়ারিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ | অনলাইন সংস্করণ

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৫ (ডিআইটিএফ) এর স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বিশেষ আয়োজন হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের সম্মানার্থে মেলা প্রাঙ্গণে মুগ্ধ কর্নারের ন্যায় স্থাপনা তৈরি করা হবে এবং স্থিরচিত্র প্রদর্শিত হবে।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ইপিবির সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বাণিজ্য মেলা স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মো. সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় কার্যপত্র উপস্থাপন করেন ইপিবির ভাইস-চেয়ারম্যান (স্টিংয়ারিং কমিটিরও ভাইস-চেয়ারম্যান) জনাব মো. আনোয়ার হোসেন। মেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক ও আর্থিক নীতি নির্ধারণ, বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন, বিভিন্ন প্রকার স্টল/প্যাভিলিয়ন/রেস্টুরেন্ট এবং মেলার প্রবেশ টিকেটসহ অন্যান্য ইজারা কাজের ফ্লোর মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এবারও বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে পূর্বাচলস্থ বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে। মেলার লে-আউট প্ল্যানে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন/স্টলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে যা দেশীয় উৎপাদক-রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশী অংশগ্রহনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে বরাদ্দ প্রদান করা হবে।

মেলার সার্বিক নিরাপত্তা এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণার্থে মেলা প্রাঙ্গণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র‌্যাব নিয়োজিত থাকবে। মেলার পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে এবারের মেলায়। মেলায় খাদ্য দ্রব্যের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ গঠিত টিম মেলা চলাকালীন প্রত্যহ ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হবে। মেলার থাকবে পর্যাপ্ত কার পার্কিং এর সুবিধা। ৫ শতাধিক গাড়ি পার্কিং সুবিধাসংবলিত দ্বিতল কার পার্কিং বিল্ডিং ছাড়াও এক্সিবিশন হলের বাইরে ৬ একর জমিতে বিস্তর পার্কিং এর ব্যবস্থা থাকবে। মেলার সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং এর জন্য মেলায় স্থাপন করা হবে একটি অস্থায়ী সচিবালয় ও দর্শনার্থীদের সকল
প্রকার তথ্য প্রদানের জন্য থাকবে একটি তথ্য কেন্দ্র। ব্যাংকিং সার্ভিসের জন্য মেলায় থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্যাংক বুথ। মা ও শিশুদের কথা বিবেচনা করে মেলায় স্থাপন করা হবে ২টি মা ও শিশু কেন্দ্র।

এবারের মেলায় ২টি শিশু পার্ক ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবার মধ্যে রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, মসজিদ, নিউট্রিশন এন্ড অটিজম সেবা, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক ও শোভন চেয়ার/বেঞ্চ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হবে।

সাধারণ দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড হতে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত বিআরটিসি ও কয়েকটি যাত্রীবাহী বাসের ডেডিকেটেড সার্ভিসের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মেলা চলাকালীন এ বাস সার্ভিস চালু থাকবে।

এছাড়াও মেলায় থাকছে অন্যান্য যেসব আয়োজন:

 মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর/পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজন করা হবে;
 বিদেশী উদ্যোক্তা/প্রতিষ্ঠান আকৃষ্টকরণে সংযোজিত হবে স্বতন্ত্র সোর্সিং কর্নার ;
 বয়সভিত্তিক দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নির্মাণ করা হবে প্রযুক্তি কর্নার, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য
সিটিং কর্নার;
 শিশুদের জন্য থাকবে প্রযুক্তিভিত্তিক ২টি বৃহৎ শিশু পার্ক;
 পণ্য প্রসার ও বিপণনের জন্য মেলায় থাকবে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র;
 তারুণ্যের শক্তি ও উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে মেলায় থাকবে বিভিন্ন আয়োজন;
 রপ্তানি নীতিতে ঘোষিত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত ও বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতের জন্য থাকবে
পৃথক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা;
 মহিলা, প্রতিবন্ধী, সুবিধা বঞ্চিত ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী, কুটির শিল্প, তাঁত শিল্প, বস্ত্র শিল্প ও হস্ত
শিল্পের জন্য সংরক্ষিত থাকবে কিছু সংখ্যক স্টল;
 বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, জনকল্যাণমূলক সমিতি, মহিলা উদ্যোক্তা ও
সমিতি, প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তা, সুবিধা বঞ্চিত ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠী, কুটির শিল্প, তাঁত শিল্প, বস্ত্র শিল্প
ও হস্ত শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য কিছু সংখ্যক স্টল সংরক্ষিত থাকবে;
 স্টল বরাদ্দের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাগণকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে;
 ইপিবির বিভিন্ন সার্ভিসসমূহ প্রক্ষেপণের জন্য তৈরি করা হবে দৃষ্টিনন্দন ইপিবি প্যাভিলিয়ন;
 মেলা পরিচালনার জন্য মেলা সচিবালয়ের পাশাপাশি নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটিসহ থাকবে ১১টি
কমিটি।

উল্লেখ্য, দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল হতে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হচ্ছে। পূর্বের ন্যায় ২০২৫ সালের বাণিজ্য মেলাও মাসব্যাপী চলবে।

 

আবা/এসআর/২৪