অভাবের তাড়নায় সন্তানকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করলেন বাবা-মা
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২২, ২১:১১ | অনলাইন সংস্করণ
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জে ১৩মাস বয়সি জোবায়েরা আক্তার মিনা নামে শিশু সন্তানকে মাত্র ১লাখ টাকায় নোটারী, পাবলিকের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় স্বকৃতির দিয়ে আপন পিতা-মাতা তাদের আপন সন্তানকে বিক্রি করে দিয়ে এক লাখ টাকা আনন্দের সাথে গুনে বুঝে নিয়েছেন বলে এক চাঞ্চল্যকর খবর চাঁদপুর জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
এ সন্তানের পিতার নাম মো. বশির উল্লাহ্ মজুমদার ও মাতা আছমা আক্তার। তাদের বাড়ি হচ্ছে, হাজীগঞ্জ উপজেলার পৌরসভাধীন ৩নং ওয়ার্ড ধেররা-বিলওয়াই গ্রামের ইউনুস মজুমদার বাড়ি। শিশু সন্তানকে মাত্র ১লাখ টাকায় নোটারী, পাবলিকের মাধ্যমে আপন পিতা-মাতা বিক্রি করলেন।
শিশুর পিতা-মাতা জানান, সংসার চালাতে না’পেরে অভাবের তারনায় শিশুর পিতার চিকিৎসা করাতে না পেরে শিশু বিক্রি করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (২২মার্চ) বিকেলে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জানান, শিশু মিনার আপন চাচা। যদিও শিশুটিকে গতকাল সোমবার(২১মার্চ) দুপুরে শহরের চাঁদপুর নোটারী, পাবলিকের কার্যালয়ের মাধ্যমে রাজধানীর এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে সন্তানটি ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে ফেইসবুকে লেখা-লেখি শুরু হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি জানান,চেস্টা কালে সন্তান বিক্রেতা পিতা মো. বশির ও মাতা আছমা আক্তার খবর শুনে তাদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান।
শিশুটির বাবা মো. বশির মুঠো ফোনে জানান, ২০১৬ সালে সিএনজিচালিত স্কুটারের চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর চিকিৎসাজনিত কারণে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি টাকার অভাবে চিকিৎসা এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারছেনা। এছাড়াও তিনি অসুস্থ্যতার কারনে আয়-রোজগার করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, আমার সাড়ে তিন বছর ও তের মাস বয়সি দুইটি কন্যা শিশু রয়েছে। টাকার অভাবে আমার চিকিৎসা, ঋণ পরিশোধ ও বাচ্চাদের খাবার কিনতে (ক্রয়) করতে পারছিনা। এদিকে অসুস্থতার কারনে কাজও ঠিক মত করতে পারছিনা।সংসাওে ্অভাবের কারননে সন্তানদেও আহার যোগাতে পারছিনা। তাই ছোট মেয়েকে দত্তক দিয়ে দিয়েছি। বিনিময়ে তারা আমার চিকিৎসার জন্য ১ লাখ টাকা দিয়েছে।
শিশুটির মা আছমা আক্তার বলেন, মেয়ের জন্য পরান পড়ে (মায়া লাগে)। কিন্তু কি করবো, আমার স্বামীর চিকিৎসা দরকার। তিনি অসুস্থ্যতার জন্য কোন কাজ কর্ম করতে পারেন না। তিনি সুস্থ্য থাকলে আমাদের খাওয়া-পড়ার সমস্যা হতো না। তাই বাধ্য হয়ে মায়া ত্যাগ করে মেয়েটারে দত্তক দিয়েছি।
পৌরসভার কাউন্সিলর মহসিন ফারুক বাদল বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। দ্রুত ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। অভাবের কারনে সন্তান যদি বিক্রি হয়ে থাকে তা’আমি সমাধান করার চেস্টা করবো।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চ্জা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য আমি একটি বিশেষ টিম ঢাকায় পাঠিয়েছি। তারা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে গিয়েছে। তিনি জানান, দত্তক নেয়ার কিছু আইনগত বিধান রয়েছে। আমি আইনী প্রক্রিয়ায় যা’যা’ করার সবই করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার জানান, বিষয়টি গুরুত্বর অপরাধ। বিষয়ট্ িখতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করবো এবং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।