সুলতানুল আউলিয়া কুতুবুল আকতাব গওছে জামান আরেফ বিল্লাহ হজরত শাহসুফী আলহাজ্জ খান বাহাদুর আহ্ছান উল্লা (র.) এঁর ১৪৯তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) পাক রওজা শরীফ প্রাঙ্গণে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের উদ্যোগে সকাল ১০টা থেকে ১.৩০ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সেমিনারের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ আশিকুর রহমান, গজল—মুর্শিদি ও নাতে রসুল পাঠ করেন মোঃ আনিছুর রহমান(নলতা শরীফ) ও মেহেদী হাসান (অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
খান বাহাদুর আহ্ছান উল্লা ইন্সটিটিউটের পরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলামের সঞ্চলনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মিশনের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্জ মোঃ এনামুল হক, সেবা—তথ্য প্রদান করেন সহ—সভাপতি আলহাজ্জ মোঃ সাইদুর রহমান, সেমিনারে “জন্ম সার্ধশত বর্ষের শ্রদ্ধার্ঘ্য” শির্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন কালিগঞ্জ কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, বিশিষ্ট সাহিত্যিক গাজী আজিজুর রহমান, আলোচনা পেশ করেন খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইন্সটিটিউট এর মহাপরিচালক এএফএম এনামুল হক, মূখ্য আলোচক ছিলেন অধ্যাপক ড. কে,এম সাইফুল ইসলাম খান, (ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), তিনি সেমিনার কে পবিত্র, নুরানী, আধ্যাত্নিক সম্মেলন আখ্যা দিয়ে বলেন খান বাহাদুর আহ্্ছানউল্লা(র.) এর লিখিত প্রতিটি বইয়ের উপর পি,এইচ,ডি গবেষনা হতে পারে। তিনি বলেন এ দরবারে পৃথিবীর মানুষদের অনেক কিছু শিক্ষার আছে। সৎ সংঘ ছাড়া জীবনে সফলতা আসার সম্ভাবনা খুবই দূর্বল। তিনি বলেন নলতা শরীফ হচ্ছে আধ্যাত্নিক জনপদ। মানুষ যখন জ্ঞানী হয় সাধক হয়, তিনি যেন আতর বিক্রেতার মত হয়ে যান, তিনি সমাজের চতুর দিকে আতর বিক্রি করে সুগন্ধ ছড়ান। খান বাহাদুর আহ্্ছানউল্লা (র.) তেমনি একজন আধ্যাত্নিক সাধক ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রহিমা সুলতানা বুশরা (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,কালিগঞ্জ), আলহাজ্জ মোঃ সেলিম উল্লাহ (সাবেক সভাপতি, নলতা কেন্দ্রীয় আহ্্ছানিয়া মিশন), সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, (সাবেক মহা পরিচালক, বাংলা একাডেমী, প্রফেসর এমিরেটাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল), তিনি বলেন পৃথিবীতে বহু মানুষ আছেন কিন্তু মানব কয় জন?, যিনি সব দিক থেকে মানব ছিলেন হজরত খান বাহাদুর আহ্্ছান উল্লা (র.) কে ১৪৯ বছর পরেও আমরা স্বরণ করছি। তিনি দলাদলি পছন্দ করতেন না, বাংলাদেশে এই মুহুর্তে সুষ্ঠু রাজনীতি নেই, আছে ক্ষমতানীতি, বাংলাদেশের রাজনীতি বিকৃত হয়ে গেছে। পীর কেবলা শ্রষ্ঠার এবাদত ও সৃষ্টির সেবার দুটি কাজ করে গেছেন। খান বাহাদুর আহ্্ছানউল্লা (র.) এঁর দেখানো পথে আমরা হাটার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন মানুষকে না ভালো বাসলে, ভালো ব্যবহার না করলে কারও ইমান পূর্ণ হবে না। নিজেকে ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র না ভাবলে সত্যের সন্ধান পাওয়া যায় না। তিনি সকলকে খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) কে বুঝে শুনে অনুসরণ করার আহবান জানান। সেমিনারে সভাপতির ভাষন প্রদান করেন আলহাজ্ব অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি, (সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, সভাপতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থানীয় কমিটি ও সভাপতি নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশন)।
তিনি পীর কেবলা (র.) সম্পর্কে বলেন নারী শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নে খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা (স.) অবদান উল্লেখ যোগ্য। তিনি বলেন আমরা সৌভাগ্যবান, তিনি (পীর কেবলা (র.) জীবনের দীর্ঘ সময় আমাদের মাঝে থেকে তার প্রেম—ভালোবাসা ছড়িয়ে গেছেন। তিনি প্রকৃত মানব তৈরীর দাির্য়ত্ব পালন করেছেন। অনুষ্ঠানে অন্যানদের মধ্যে বক্তব্য রখেন প্রধান অতিথির সহধর্মিনী অধ্যাপক ড. শওকত আরা হোসেন (সাবেক চেয়ারম্যান রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) ও পাক রওজা শরীফের খাদেম আলহাজ্জ আব্দুর রাক্কাক সহ মুর্শিদ মাওলার হাজার হাজার ভক্ত অনুসারী বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন আলহাজ্জ মাওলানা আবু সাঈদ, (খতিব নলতা শরীফ শাহী জামে মসজিদ)।