পাবনায় জমির ফসল নষ্ট করে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি
প্রকাশ : ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ
কাজী বাবলা, পাবনা
পাবনায় প্রকাশ্য দিবালোকে জমির ফসল নষ্ট করে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। সরিষা, পেঁয়াজ, মরিচ, মসুরসহ নানা ফসলে ভরে উঠা ফসলি জমির মাঠ থেকে প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত একাধিক ভেকু মেশিন দিয়ে কাটা হচ্ছে মাটি। ট্রাক যোগে এইসব মাটি যাচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটা ও বসতভিটায়। গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে ভারি ট্রাক চলাচলে রাস্তা ভেঙে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুরে এভাবে মাটি কেটে ফসলি জমি নষ্ট করার সাথে জড়িতরা অত্যান্ত প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন স্থানীরা। অপরদিকে স্থানীয় প্রশাসন সব কিছু জেনেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের নতুন টাটিপাড়ার ফসলি মাঠে চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খানের লোকজন মোটা বালু ও মাটি কাটছে। জমির মালিকদেরকে ভয়ভীতি এইসব জমির মাটি কাটা হচ্ছে। তবে মাটি কাটার বেশির ভাগ জমিই খাস। স্থানীয় প্রশাসন নীরব থাকায় ভূমি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে ফসলি জমির মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতেছে চক্রটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, যারা মাটি কাটছে তারা কৃষকদের কাছ থেকে কিছু জমি কিনেছে। আর বাকি জমিগুলো সরকারি জমি। প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের যোগসাজশে প্রতিদিন ৪-৫টি ভেকু মেশিনের মাধ্যমে জমির মাটি কেটে পুকুর বানিয়ে ফেলা হয়েছে। এতে প্রচুর ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও অন্যের জমির ওপর দিয়ে জোর করে রাস্তা বানিয়ে ট্রাক যোগে মাটি নেওয়া হচ্ছে। পাশেই রয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। ফলে কৃষকরা অসহায়ত্ববোধ করছে।
চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খান তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মাটি কাটার সাথে আমি বা আমার কোন লোকজন জরিত নাই। তিনি বলেন, এই মাটি কাটছে ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার বাবু ও সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ। তারা প্রতিদিন ৪০-৫০ গাড়ি মাটি কাটছে।
সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ বলেন, গত ১০ বছরেও আমি ওই এলাকায় যাইনি। ওই এলাকাতেই চেয়ারম্যান সিদ্দিক খানের বাড়ি। গত ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে সে ভোট করে জিতেছে। আমরা নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছি, কিন্তু চেয়ারম্যানের এলাকা হওয়ায় আমরা ওই এলাকাতেই যায়নি। এলাকাটি তার ভাই সাহাব উদ্দিন খান ও সহযোগিরা নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি ওই এলাকার মাঠ-ঘাট সবই তাদের নিয়ন্ত্রণে হয়। আমাদের নাম জড়ানো সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিদা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যেই লোক পাঠিয়েছি। খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।