রাঙামাটির কাউখালীতে সশস্ত্র উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের হাতে অপহরণের শিকার তিন জন ইটভাটা শ্রমিককে ৫দিন পর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। সোমবার ভোররাতে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় শ্রমিক জিয়াউর রহমান(২৮), আহসান উল্লাহ(২৯) ও মো: মোসলেম উদ্দিন(৪০)কে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারূফ আহম্মেদ। গত বুধবার মধ্যরাতে রাঙামাটির কাউখালীর কলমপতি ইউনিয়নের তারাবুনিয়ার খাঁজা গরীবে নেওয়াজ ইটভাটা থেকে এই তিন শ্রমিককে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে দূর্গম পাহাড়ে নিয়ে গেছিলো সশস্ত্র অস্ত্রধারী উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা।
এই বিষয়ে সোমবার বিকেলে রাঙামাটিস্থ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের দুর্গম ডাবুন্যাছড়ি ও আশে পাশের বিস্তৃৃত এলাকায় পুলিশের টানা অভিযানের মুখে টিকতে না পেরে অপহরণকারীরা অপহৃতদের হাটহাজারীর সীমান্তবর্তী এলাকায় তাদের ফেলে পালিয়ে যায়। খরব পেয়ে উদ্ধার অভিযানে থাকা কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ(তদন্ত) মোঃ আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে কাউখালী থানা পুলিশের একটি দল তাদেরকে কাউখালীতে নিয়ে আসে।
এদিকে, কাউখালী থানার ওসি মো. পারভেজ আলী জানান এই অপহরণের সাথে সরাসরি জড়িত দুইজন পাহাড়ী সন্ত্রাসীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বর রাত ১০টায় কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা এলাকা থেকে মুক্তিপণের অগ্রিম ৫ লাখ টাকা গ্রহণকালে ২ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতদের দেয়ার তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃতরা ডাব্বুনিয়া এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাবু মারমার হেফাজতে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভোর রাতে ওসি পারভেজ আলীর দিক নির্দেশনায় ও ওসি (তদন্ত) মো. আব্দুল হালিমের নেতৃত্বে পুলিশের ৫টি টিম বিভক্ত হয়ে কাউখালীর ডাব্বুনিয়া এলাকার সম্ভাব্য স্থানটি ঘিরে ফেলে এবং পুলিশের সবকটি টিম একত্রিত হয়ে দুর্গম ডাব্বুনিয়া ছড়া পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করেন।
পুলিশের অভিযান নিশ্চিত জেনে সন্ত্রাসীরা অপহৃতদের কাউখালীর রাউজানের রাবার বাগান এলাকায় ফেলে চলে যায়। পরে অপহৃতরা রাউজান হয়ে হাটহাজারীর থানার ফতেয়াবাদ এলাকায় ইটভাটা মালিক আলমগীর কোম্পানীর সন্ধানে যায়।
অভিযানে থাকা পুলিশের ওসি (তদন্ত) আব্দুল হালিম খবর জানার পর তৎক্ষণাৎ ফতেয়াবাদ এলাকায় গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। পরে তাদের কাউখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাঙামাটিতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এই ঘটনার সাথে আরো কারা কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।