ঈশ্বরদী উপজেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত ঈশ্বরদীর মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। শীতে বিশেষ করে ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এদিকে ঈশ্বরদীতে আবারও নেমেছে তাপমাত্রার পারদ। বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে ঈশ্বরদীতে চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন বুধবার ( ১১ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি এখানে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকড করা হয়। শীত নিবারণের চেষ্টায় আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে নিম্নআয়ের মানুষকে। সকালে ঢেকে ছিল ঘন কুয়াশায়। মহাসড়কে গাড়ীর হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। প্রাণীরাও শীতে জুবু থুবু অবস্হা। অনেকে গৃহপালিত গরু, ছাগলকে শীত নিবারনের জন্য পাটের বস্তার চট, পুরাতন গরম কাপড় শরীরে জড়িয়ে দিচ্ছেন।
শীতে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। শহরের রেলগেট এলাকায় কাজের সন্ধানে থাকা রহিম নামের এক দিনমজুর বলেন, কনকনে শীত পড়েছে। এর সঙ্গে বাতাস শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তারপরও থেমে নেই কাজ। বাধ্য হয়েই কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। শীতে কাজ না পেয়ে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে অনেকেরই।
আকবর আলী নামে এক হোটেল কর্মচারী বলেন, প্রতিদিন সকালে নাশতার জন্য হোটেলে প্রচুর চাপ থাকে। এজন্য ফজরের আজানের পর থেকেই কাজ করতে হয়। ভোরে পানিতে হাত দিলে মনে হয় অবশ হয়ে যাচ্ছে। আঙুলগুলো নাড়ানো যাচ্ছে না। তারপরও পেটের দায়ে কাজ করছি।
শহরে রিকশাচালক মাসুদ বলেন, আজ প্রচণ্ড শীত লাগছে। ঠান্ডার জন্য রিকশা চালানো যাচ্ছে না। হাত-পায়ের পাতা মনে হচ্ছে বরফ হয়ে যাচ্ছে। পেটের দায়ে বাড়ি থেকে বের হলেও প্যাসেঞ্জার পাওয়া যাচ্ছে না।
আবেদ আলী নামে এক কৃষক বলেন, আজ ভোরে কাজে যেতে পারিনি শুধু অতিরিক্ত শীতের কারণে। এভাবে ঠান্ডা পড়লে কাজে যাওয়া সম্ভব হবে না। ফসলের ঠিকমতো পরিচর্যা করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে, শীতজনিত কারণে উপজেলার হাসপাতালে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। উপজেলা হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনার মা ও শিশু চিকিৎসক ডা. আব্দুল বাতেন বলেন, তীব্র শীতে শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালের আউটডোরে প্রচুর রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। শীতজনিত কারণে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।