ঢাকা ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

'বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে'

'বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে'

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে শিক্ষা বিস্তারে যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন অতীতে আর কোন সরকার এ পদক্ষেপ নেয়নি। সে জন্য আজ বাংলাদেশে শিক্ষা বিস্তারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০বছরে কোন সরকার মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তা করতে সক্ষম হয়েছে।

শনিবার বিকালে (১৪ জানুয়ারী) পিরোজপুর সদর ও নেছারাবাদে (স্বরূপকাঠি) উপজেলার বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্ধোধন শেষে কামারকাঠী নবকুমার (এন.কে.) ইনস্টিটিউশনের শতবর্ষ পূর্তি উৎসবে ইনস্টিটিউশন মাঠ প্রাঙ্গণে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেছেন, বর্তমান প্রজন্মকে শুধু সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করলেই হবেনা। সু-শিক্ষার পাশাপাশি তাদেরকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে তারা যেন সর্বনাশা মাদক, ইভটিজিং ও সন্ত্রাসের মত ভয়াবহ কর্মকাণ্ডে যেন জড়িয়ে না পড়ে। আর এ জন্য শিক্ষক ও অভিবাবকদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। শিক্ষিত জাতি ছাড়া একটি দেশের উন্নয়ন কোনভাবেই সম্ভব নয়।মন্ত্রী বলেন, ইংরেজি বছরের প্রথম দিনে কোটি কোটি শিক্ষার্থীর হাতে ঝকঝকে তকতকে নতুন বই উৎসবের মাধ্যমে তুলে দিয়ে শিক্ষা জগতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রে কোন সরকার শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দেয়ার সক্ষমতা দেখাতে পারেনি। যেটা শেখ হাসিনার সরকার দেখিয়েছে। এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আমরা যেন ইবাদতের জায়গার মত মনে করি। কোন অযোগ্য লোককে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠিত না করি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষকরা যাতে শিক্ষা দিতে পারেন এজন্য বর্তমান সরকার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

মন্ত্রী বলেন, ১৪ বছর কারান্তরালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার আরাদ্ধ সাধনা ছিল আধুনিক স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার। যেখানে ধনী গরীব ভেদাভেদ থাকবে না। যেখানে কোন মানুষ বৈষম্যের স্বিকার হবে না। যেখানে একজন মানুষ অশিক্ষিত থাকবে। তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে ফলে এদেশে স্বপ্নের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, পায়রা সমুদ্র বন্দর, কর্ণফুলি ট্যানেল, দেশের রাস্তাঘাট, ব্রীজ কালভাট, আধুনিক মডেল মসজিদ নির্মানসহ দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রাত দিন পরিশ্রম করে চলছে। বিভিন্ন মেঘা প্রকল্প আজ বাস্তবায়িত হয়েছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিভাজিত হওয়ার কারণে স্বাধীনতা বিরোধীরা বিভিন্ন জায়গায় স্থান নিতে সক্ষম হয়েছে এবং স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানের প্রেতাত্মার দোসরা দেশি-বিদেশি নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। ওইসব ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, বিপর্যস্ত ও বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে গেছেন। উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শেখ হাসিনাকে আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনার বিকল্প নাই। জননেত্রী শেখ হাসিনা রাত দিন পরিশ্রম করে দেশের উন্নয়ন করে চলছেন। এধারা অব্যহত রাখতে আওয়ামীলীগের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে।

শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মুইদুল ইসলাম মুহিদ, ইনিস্টিউশনের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অরবিন্দ কর, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মেজর (অবঃ) মো. নাজমুল হাসান, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবি এ্যাড. মো. মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা বেবি রানী দে, পুলিশ কর্মকর্তা মো. মোরশেদ তোয়া, আমেরিকা প্রবাসী ভাস্কর চন্দ, উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মো. মিজানুর রহমান মজনু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধান শিক্ষক নুরুর আমিন, ইউএনও মো. মাহাবুব উল্যাহ মজুমদার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. রিয়াজ হোসেন পিপিএম, বীর মুক্তিযুদ্ধ গৌতম চৌধুরী, জেলা যুবলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু, জিয়াউল হাসান জিয়া সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিকে আমরা যদি সমূলে বিনাশ করতে না পারি তবে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা অর্থবহ হবে না। নতুন প্রজম্মকে আর্দশ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান এদেশকে উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্রে পরিনত করতে, অবিরাম পরিশ্রম করে চলছেন। তাই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এ এলাকার উন্নয়নে কাজ করে চলছি। ইতোমধ্যে অনেক উন্নয়ন দৃশ্যমান হয়েছে। অনেক প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মন্ত্রী এর আগে, পিরোজপুর সদর উপজেলার নবগ্রাম সম্মিলিত কচুবুনিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেণ। নেছারাবাদ উপজেলার জলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ হতে মাদ্রা বাজার সড়ক বিসি দ্বারা উন্নয়ন কাজের শুভ উদ্বোধন, পূর্ব জলাবাড়ি খ্রিষ্টান বাড়ি কালভার্ট হতে মাদ্রা বাজার পর্যন্ত সড়ক বিসি দ্বারা উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, কামারকাঠী নবকুমার ইনস্টিটিউশনের একাডেমিক ভবনের শুভ উদ্বোধন করণে। ১৯২০ সনে প্রতিষ্ঠিত কামারকাঠী নবকুমার (এন.কে.) ইনস্টিটিউশনটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বীকৃতি পায়। শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে এক মোটর শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

পিরোজপুর
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত