স্বল্প আয়ের পরিবারের প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ, নারী, শিশু ও অসহায়দের জন্য একিভূত চক্ষু পরিসেবায় বরিশালে প্রকল্প শুরু করল আভাস।
সোমবার সকাল ১১টায় বরিশাল গ্রান্ড পার্ক হোটেলে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভার মাধ্যমে ‘ইমপ্রুভ এ্যাকসেস টু ইনক্লুসিভ এন্ড কম্প্রিহেনসিভ আই হেলথ সাভিসেস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পটির বিস্তারিত উপস্থাপন করা হয়।
আভাস এর নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজলের সভাপতিত্বে উক্ত অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বরিশাল মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের পরিচালক, ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বরিশাল মোঃ সাহজাহান হোসেন, পিপিএম এবং বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের চক্ষু বিভাগের বিভাগিয় প্রধান ডা. ডি. বি. পাল।
আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা সিবিএম এর সহযোগিতায় প্রকল্পটির মাধ্যমে বরিশাল জেলার সদর, বানারীপাড়া ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ৬ লক্ষ উপকারভোগীকে বিভিন্ন ধরনের চক্ষু স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে। আগামী ৩ বছর ধরে সচেতনতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা, প্রতিবন্ধী সংগঠনগুলোকে দক্ষ ও শক্তিশালী করা এবং সরকারি চক্ষু সেবার মান বৃদ্ধিতে সহযোগিতা, ভিশন সেন্টার ও বেইজ হাসপাতালগুলোতে সেবার মান বাড়ানো ও অন্তর্ভূক্তিমূলক সেবা প্রদাণে সহায়তা, জাতীয় - স্থানীয় সরকার এবং সংশ্লিস্ট পক্ষগুলোকে চক্ষু সেবার প্রতিবন্ধকতা জানানো ও সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে চক্ষু সেবার মান উন্নয়ন করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বরিশাল মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আভাসকে ধন্যবাদ কারন তারা প্রকল্পটি তৈরি করেছে এবং দাতা সংস্থাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে এই এলাকায় কাজটি করা দরকার। সরকার এসডিজি বাস্তবায়ন ও মধ্যম আয়ের দেশে পৌছানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে, আর এই লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে সমাজে পিছিয়ে পরা মানুষদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে যদি ১০০ জন মানুষও চোখের আলো ফিরে পায় আর সেই ১০০ জনের মধ্যে যদি অন্তত ১০ জন সঠিকভাবে দেশের জন্য কাজ করে সেটাই হবে দেশের জন্য সবচেয়ে বড় কাজ।’ তিনি প্রকল্প সংশ্লিস্ট সকল পক্ষকে অনুরোধ করেন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আন্তরিক ভাবে কাজ করতে এবং তিনি নিজেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা বজায় রাখবেন বলে জানান।
বিশেষ অতিথি বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ের পরিচালক, ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আভাস যে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছেন এতে আমরা সার্বিক ভাবে সহায়তা করব। আপনারা মাঠ পর্যায়ে রোগীদের সচেতন করবেন, মোটিভেটেড করবেন, রেফারেলের মাধ্যমে রোগীদের আমাদের কাছে পাঠাবেন। আমাদের যতটুকু আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলো দিয়ে আমাদের ডাক্তাররা সাধ্যমত রোগীদের পাশে থাকবে।’
সভাপতির বক্তব্যে আভাস এর নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা কাজল বলেন, ‘আমরা সবাই জানি বর্তমান সময়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের চোখের সমস্যা হচ্ছে। এক সময় মানুষ মনে করত বয়স হলে এমনিতেই চোখের সমস্যা হবে বা চোখের সমস্যা এক প্রকারের নিয়তি বলেই ধরে নেয়া হত। এই বিষয়ে আমাদের অনেক ভুল ধারনাও রয়েছে। তবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা সাধারন মানুষকে সচেতন করব এবং স্বল্প আয়ের অসহায় মানুষদের প্রাথমিক ও উন্নত চক্ষু সেবা প্রদান করব, প্রতিবন্ধী সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করব।’
এছাড়াও, তিনি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সরকারি-বেসরকারি-নাগরিক প্রতিনিধিসহ সংশ্লিস্ট সকল পক্ষের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
আভাস - আইইএইচ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোঃ আকবর হোসেনের পরিচালনায় সভায় বরিশাল জেলার সরকারি, বেসরকারি কর্মকর্তাগন, নাগরিক প্রতিনিধি, সাংবাদিক, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ, বেসরকারি চক্ষু হাসাপাতালের প্রতিনিধিগণ ও আভাস-আইইএইচ প্রকল্পের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।