স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে হাজীগঞ্জের মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:৫৭ | অনলাইন সংস্করণ

  শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুর জেলার নদী উপকূলীয় অঞ্চলসহ ৮ উপজেলায় কম-বেশী শীতকালীন শাক সব্জি উৎপাদন হয়। তবে গত কয়েক বছর যাবত এ জেলায় মিষ্টি কুমড়ার উৎপাদন বেড়েছে। জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায় এ বছর ২৮৬ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। এসব মিষ্টি কুমড়া এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার বাজারে। ছোট থেকে বড় সাইজের প্রতি পিস মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ১০০ টাকায়।

চাঁদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, এ বছর জেলার ৮ উপজেলায় শীতকালীন শাক সব্জি আবাদ হয়েছে ৫হাজার ৫শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সবচাইতে বেশী হয়েছে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প এলাকায়। ওই উপজেলায় ১২৫০ হেক্টর জমিতে সব্জির আবাদ হয়েছে। হাজীগঞ্জ উপজেলায় আবাদ হয়েছে ৭০৫ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে লাউ আবাদ হয়েছে ১৯৩ হেক্টর এবং মিষ্টি কুমড়া ২৮৬ হেক্টর জমিতে।

সরেজমিন হাজীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার অলিপুর গ্রামে এলাকায় গিয়ে দেখাগেছে, মাঠজুড়ে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ। তবে এ বছর সিত্রাংয়ের কারণে জমিগুলো আবাদ একটু দেরিতে হয়েছে। তবে এখন প্রতিটি জমিতেই মিষ্টি কুমড়া পরিপক্ক অবস্থায় রয়েছে।

ওই গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, বর্ষার শেষ দিকে কচুরিপানা স্তুপ করে রাখেন। পানি কমলে ওই কচুরিপানার স্তুপে মাটি দিয়ে লাগানো হয় মিষ্টি কুমড়ার চারা। গত কয়েক বছর এই পদ্ধেিত মিষ্টি কুমড়া ও লাউ আবাদ করে আসছেন। আবাদের পরে কোন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। এক সময় বাড়ির আশপাশে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে এ অঞ্চলের অনেকে জমিতে আবাদ করছেন বিগত বছরের তুলনায় অনেক।

বলাখাল গ্রামের কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, তিনি এ বছর ৬০ শতাংশ জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছেন। সপ্তাহে দুইদিন মিষ্টি কুমড়ার বিক্রি করেন। একদিনের উঠানো মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয় কমপক্ষে ৮০ থেকে ৯০হাজার টাকা। শ্রমিকদের নিয়ে জমি থেকে কুমড়া কেটে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে এনে স্তুপ করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এসব মিষ্টি কুমড়া পাইকারি ক্রয় করে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার আড়তগুলোতে ট্রাকে করে পাঠিয়ে থাকেন। এছাড়াও স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে বিক্রি করেন বিভিন্ন জেলার আড়তে।

হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলায় এ বছর মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে ২৮৬ হেক্টর। বেশী আবাদ হয় পৌরসভার বলাখাল, অলিপুর এবং সদর ইউনয়িনে। আমাদের জনবল কম। তারপরেও প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। মিষ্টি কুমড়ার জমিগুলোতে আমরা এখন কীটনাশক ব্যবহার না করার জন্য কৃষকদেরকে পরামর্শ দিচ্ছি। জমিতে হলুদ কাগজের মধ্যে আঠা দিয়ে টানানো হয়। এর মধ্যে পোকা মাকড় বসে মারা যায়। এই পদ্ধতিতে আমরা সুফল পাচ্ছি। এই উপজেলার মিষ্টি কুমড়া এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববতী চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।