কক্সবাজারে কাঠ মার্কেটে অভিযান, বিপুল পরিমাণ গাছ জব্দ
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:৩২ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের রামুর মিঠাছড়িতে অভিযান চালিয়ে সামাজিক বনায়ন থেকে কেটে আনা বিপুল পরিমাণ কঁচি গাছ (চারাগাছ) জব্দ করেছে বন বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) পর্যন্ত মিঠাছড়ি ইউনিয়নের কাঠিরমাথা নামক স্থানে পানেরছরা রেঞ্জ এলাকায় গড়ে উঠা অবৈধ কাঠের মার্কেটে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে গাছ চোর চক্র পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা।
রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে অভিযোগ আসছিল সামাজিক বনায়নের আকাশ মনি বাগানের চারাগাছ কেটে ওপেন বাজারে বিক্রি করছে একটি অসাধু চক্র। খবর পেয়ে সিভিল পোশাকে বিভিন্ন হাটে তদারকি বাড়ায় বনকর্মীরা। সেখানেই নানা ভাবে খবর পাওয়া যায়, এলাকাভিত্তিক প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব গাছ কাঁটার পর বাজারে তোলা হচ্ছে। এলাকার লোকজন ঘরবাড়ি মেরামত ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘর তৈরিতে ব্যবহারের জন্য এসব চারাগাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, এলাকাভিত্তিক সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী ও স্বল্প সংখ্যক বনকর্মী বাগান এলাকা পাহারা দিলেও রাতের আঁধারে গাছ কাটা রক্ষা হচ্ছিল না। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে মিঠাছড়ি কাঠিরমাথা পানেরছরা রেঞ্জাধীন এলাকায় কাঠের মার্কেটটি তুলনামূলক বড় বাজার এবং এখানেই বিপুল পরিমাণ কাঠ মজুদ হয় জেনে অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।
রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা বলেন, বিষয়টি জানিয়ে রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সহযোগিতা চাইলে তিনি স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে বিজিবি, আনসার ও বন বিভাগের সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চালান। অভিযানে কাঠিরমাথায় অবৈধভাবে সামাজিক বনায়নের ছোটগাছ বিক্রির জন্য গড়ে উঠা বাজার গুড়িয়ে দেয়া হয়। পাশাপাশি বাজারে মজুদ করা গাছ জব্দ করে ৬টি ডাম্পার পূর্ণ করে অফিস হেফাজতে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় বন মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম বলেন, বন ও প্রকৃতি মানুষের সুষ্ঠুভাবে বাঁচার মূখ্যম হাতিয়ার। সেই বনই মানুষ নির্বিচারে ধ্বংস করতে দ্বিধা করছে না। স্বল্প সংখ্যক বনকর্মী দিয়ে বন ও বাগান রক্ষা কষ্টসাধ্য হওয়ায় সামাজিক বনায়ন উপকারভোগী সৃষ্টি করার পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। এরপরও বন এবং বাগান রক্ষা না হওয়া বড় দুঃখজনক। আজকের মতো এলাকায় এলাকায় অভিযান চালিয়ে গাছ খেকোদের আইনের আওতায় আনার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
অভিযান কালে রামুর ইউএনও ফাহমিদা মুস্তফা, পানেরছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী বাহার উদ্দিন ও ধোয়াপালং রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, পানেরছড়া, চেইন্দা, লিংকরোড়, কলাতলীসহ আশপাশের বিট কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।