পটুয়াখালীর দুমকিতে ২ সন্তানের জননীকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী মো: মনির হোসেন ওরফে লিটন সর্দার (৪৭) ও মোসা: ময়ূরীকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলার ২ নং আসামী দেবর মো: রিপন সর্দার (৪৪) ও ননদ মোসা: সালমা বেগম(২৮) পলাতক রয়েছেন।
গত ৩ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের জামলা গ্রামের তালুকদার বাড়ি বাজার এলাকায় সরকার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুন্নি বেগম (৩৮) বি-বাড়িয় জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের মৃত. শাহজাহান মিয়া'র মেয়ে এবং দুমকি উপজেলার জামলা গ্রামের মৃত. আ: রব সর্দারের বড় ছেলে মো: মনির হোসেন ওরফে লিটন সর্দারের স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসামী লিটন সর্দার কুমিল্লা রুটে গাড়ি চালানোর সুবাদে গত ৮/৯ বছর পূর্বে প্রেম করে মুন্নি বেগমকে বিয়ে করেন। মুন্নী-লিটন দম্পত্তির সংসারে ওমর (৮) ও মুছা (১৮ মাস) নামের দু'টি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে দেবর ননদদেরা যৌতুককে কেন্দ্র করে প্রায়ই মুন্নি আক্তারকে নির্যাতন করতেন। ঘটনার দিন দুপুর দেড়টার দিকে প্রতিবেশীরা বাড়ির পেছনে আগুন দেখতে পেয়ে দৌড়ে আসেন। মুন্নিকে আগুনে ঝলসানো অবস্থায় পুকুরে দেখে প্রথমে ওই বাড়ির শশী নামের এক কিশোরী উদ্ধারে এগিয়ে আসে এবং পরে ৩ নং আসামী ননদ সালমা বেগম সহযোগিতা করেন। আশংকাজনক অবস্থায় মুন্নীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বরিশালে রেফার করেন। এরপর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত ঢাকায় প্রেরণের পরামর্শ দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে মুমূর্ষু মুন্নীকে ভর্তি করা হয় ৪ জানুয়ারি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ জানুয়ারি দিবাগত রাত দেড়টায় সে মারা যায়। ময়নাতদন্তের পর লাশ মুন্নির গ্রামের বাড়ি বি-বাড়িয়ার সরাইলে দাফন করা হয়।
এরপর থেকে লিটন সর্দারের পরিবার এলাকায় একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় ও মুন্নীকে বিনাচিকিৎসায় মারবেন হুমকি দিয়ে নেয়া ২৪ সেকেন্ডের পাতানো একটি জবানবন্দির ভিডিও লোকজনকে দিয়ে ঘটনার ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
মুন্নীর কাকা অভিযোগ করে বলেন, রিপন যদি বাচাঁনোর জন্য আমার ভাতিজীকে ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দেয় তবে তার হাতের বাহু পর্যন্ত আগুনে পুড়ে যায় কিভাবে? বেশি হলে শুধু হাতের তালু পুড়তো।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়দের কাছে আমরা জেনেছি লিটন সর্দার ১ম স্ত্রী রেখা বেগমকেও যৌতুকের জন্য বিভিন্ন প্রকারের নির্যাতন করতেন। তাই ওই স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে চলে গেছে। এছাড়াও সে পূর্বে মাদক মামলায়ও জেল খেটেছে।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবদুস সালাম বলেন, নিহতের ভাই হামদু মিয়া ১৮ জানুয়ারি একটি মামলা করছেন। যার নং-৭। দু'জন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকিদের ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।