অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার

চৌদ্দগ্রামে ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, ঘাতক গ্রেপ্তার

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২৩:১১ | অনলাইন সংস্করণ

  চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের উজিরপুর ইউনিয়নের শামুকসার গ্রামস্থ বোয়ালজুড়ি খালের পাড় থেকে অটোরিকশা চালক রাসেদ মিয়ার লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ১৩ দিনের মধ্যেই ঘাতক খাইরুল ইসলাম শাকিলকে একটি চাকুসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শাকিল উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিকের পুত্র।

বুধবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম থানায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা, পরিদর্শক তদন্ত রাজিব চক্রবর্তী, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান। 

সংবাদ সম্মেলনে সহকারী পুলিশ সুপার(চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট সার্কেল) জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি বুধবার বিকেলে মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামের আবদুল মালেক মিয়ার ভাড়াটিয়া, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারি থানার বারঘরিয়া গ্রামের মশিউর রহমানের ছেলে রাসেদ মিয়া অটোরিকশা নিয়ে ভাড়া বাসা থেকে বের হন। পরদিন বৃহস্পতিবার উজিরপুর ইউনিয়নের শামুকসার গ্রামের জনৈক মামুন চৌধুরীর মুরগির ফার্মের পশ্চিমে বোয়ালজুড়ি খালের পাশে রাজ্জাক মিয়ার জমিতে ভিকটিম রাসেদ মিয়ার নাকে মুখে জমাট বাধা রক্ত, নাভির উপরে ডান পাশে একটি গভীর ক্ষতচিহ্ন এবং বাম পায়ের গোড়ালীর উপরে ক্ষতচিহ্ন যুক্ত লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে। ওই রাতেই রাসেদ মিয়ার বাবা মশিউর রহমান বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

এ ঘটনায় কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, বিপিএম (বার) এর নির্দেশনায় আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও মুন্সিরহাট বাজার হইতে ঘটনাস্থলে গমনাগমনের বিভিন্ন রাস্তা ও বাজারে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘাতক খাইরুল আলম শাকিলকে শনাক্ত করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বিশেষ টিম মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে খাইরুল আলম শাকিলকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাকুসহ তাঁর নিজ বসত বাড়ি হতে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত শাকিলকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে।

শাকিল জানায়, সে রাসেদ মিয়ার অটো রিক্সায় উঠে। পরবর্তীতে কাদৈর বাজার হয়ে গুটি মার্কেট, এরপর চৌমুহনী বাজার থেকে কাশিনগর বাজার হয়ে অলিপুরের আকাবাকা রাস্তা দিয়ে শামুকসার গ্রামে জনৈক মামুন চৌধুরীর মুরগির ফার্মের নিকট নির্জন স্থানে বস্তা আনার কথা বলে খালের পাড়ে নিয়ে শাকিলের সাথে থাকা চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়ে অটোরিকশা চালকের টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তখন অটোরিকশা চালক টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করিলে তাঁর সাথে ধস্তাধ্বস্তি হলে একপর্যায়ে শাকিল তাঁর সাথে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে চালক রাসেদ মিয়ার পেটে আঘাত করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে নির্জন স্থানে অসহায় অবস্থায় অটোরিকশা চালক রাশেদ মিয়ার মৃত্যু হয়।