নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামে আখিঁ আক্তার নামে এক গৃহবধুকে হাত-পা বেঁধে দুই সন্তানের সামনে হাতুড়ি পেটা করে হত্যা করেছে তার স্বামী।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী সাইদুল ইসলাম তার স্ত্রীকে হাতুড়ি পেটা করে পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা আখিঁকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোঘণা করেন। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের ইব্রাহিম প্রধানের মেয়ে আখিঁ আক্তারের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী চেঙ্গাকান্দি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলামের সঙ্গে ১৫ বছর আগে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই ছিল। দাম্পত্য জিবনে তাদের অর্ণব ও সিয়াম নামের দুই সন্তান রয়েছে। নানা অজুহাতে সাইদুল ইসলাম প্রায়ই আখিঁ আক্তারকে মারধর করতো। বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতেও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে গৃহবধু আখিঁ আক্তারকে স্বামী সাইদুল ইসলাম হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে উপর্যুপুরি মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটাতে থাকে। হাতুড়ির আঘাতে আখিঁ আক্তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এসময় সন্তানরা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সাইদুল পালিয়ে যায়। গ্রামবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে সাঈদুল ইসলাম তার দুই ছেলের সামনে তার স্ত্রীকে হাত-পা বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে। প্রায়ই সে স্ত্রীকে মারধর করতো। বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ তার ঘর থেকে ছেলেদের চিৎকারের শব্দ শুনে গিয়ে দেখি স্ত্রীর হাত-পা বাঁধা। মাথায় বিভিন্ন অংশ থেতলানো ছিল। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষনা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী নিহত আঁখির ছেলে ১২ বছর বয়সী অর্ণব জানায়, রাতে বাবা ও মায়ের ঝগড়া হয়। বিভিন্ন সময়ে বাবা-মা ঝগড়া করে। বৃহস্পতিবার রাতে একপর্যায়ে মা’কে বাবা হাত-পা বেঁধে ঘরে থাকা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আমরা চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। এক পর্যায়ে বাবা পালিয়ে যায়। মাকে হাসপাতালে নিলে মা মারা যায়। মায়ের হত্যার বিচার চাই।
চেঙ্গাকান্দি গ্রামের আব্দুল আউয়াল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবারে কলহ ছিল। এ কলহ থেকেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম বলেন, গৃহবধু হত্যাকান্ডের খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।