ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন থমকে আছে ঝর্ণার

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ

  মোঃ ইসহাক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

শ্রাবণী আক্তার ঝর্ণার। ২২ বছরের তরুণী। সবাই তাকে ঝর্ণা নামেই ডাকে। ঝর্ণার পদচালনা ও চঞ্চলতায় উচ্ছ্বাসিত হয়ে থাকতো সর্বত্র। পরিবারের ভরসা ছিল এই একটি নাম। প্রাপ্তি আর প্রত্যাশার ছোট্ট জীবনে বড় কোনো স্বপ্ন ছিল না তার। স্বপ্ন দেখতো সে একজন নামকরা ডাক্তার হবে। সমাজের অসহায় গরিব মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেবেন। 

শিক্ষা জীবনে সফলতার সঙ্গে প্রতিটি সিঁড়ি বেয়ে স্বপ্ন পূরণের মাঝপথে এসেও যেন তা অধরাই থেকে যাচ্ছে ঝর্ণার। ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে স্পর্শ করতে মেডিকেল কোচিং করছিলো। ঠিক তখনই তার টিউমার ধরা পড়ে এবং সেখান থেকে ব্রেস্ট ক্যান্সার। আর কিছুদিন পরই হয়তো শিক্ষা জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হতো তাঁর। স্বপ্ন দেখা সেই ডাক্তার হওয়ার বাস্তবায়ন ছিল একেবারেই নিকটে। কিন্তু সেই আশাকে নিরাশায় রেখে এখন তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন থমকে আছে। 

'অসহ্য মাথার যন্ত্রণায় সারাক্ষণ ছটফট করি। যন্ত্রণায় আমার মরে যেতে ইচ্ছা করে। কিন্তু আমি বাঁচতে চাই, বড় হয়ে দেশের সেবা করতে চাই।' ২০১৮ সালে ঈশ্বরগঞ্জ বিশ্বেশ্বরী সরঃ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন A+ এবং ২০২০ সালে শহিদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজ, ময়মনসিংহ থেকে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন A+ পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থী ব্রেইন ক্যান্সারে আক্রান্ত শ্রাবণী আক্তার ঝর্ণার বাঁচার এই আকুতি চারপাশের পরিবেশ ভারী করে তোলে।

"উদ্যমে শক্তি, শ্রমে কল্যাণ" এই প্রত্যয় ধারণ করে ঈশ্বরগঞ্জ পরিবারের ফেসবুক সদস্যরা দাঁড়িয়েছেন ঝর্ণার পাশে। শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ঈশ্বরগঞ্জ পরিবারের এডমিন ও মডারেটর প্যানেলের সদস্যরা চিকিৎসা সহায়তার টাকা তুলে দেন ঝর্ণার হাতে। 

ঝর্ণার মা ফাতেমাতুজ জহুরা বলেন, 'ঝর্ণা প্রথম প্রথম মাথায় ব্যথা অনুভব করত। একপর্যায়ে ব্যথা অসহ্য হয়ে ওঠায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা করে মাথায় টিউমার ও ক্যান্সার ধরা পড়ে। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ঝর্ণার অপারেশন অত্যন্ত জটিল ও ব্যয়বহুল। 

এ অবস্থায় ঝর্ণার পরিবারের সদস্যরা দিশাহারা হয়ে পরেন। মুম্বাইয়ে টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সবার সহযোগিতায় ১৪-১৫ লাখ টাকা খরচ করে প্রায় সুস্থ। শেষ পর্যায়ে ভারতে চিকিৎসা করাতে এখন আরও ৩-৪ লাখ টাকা প্রয়োজন। বর্তমানে তার পরিবারের পক্ষে এ টাকার ব্যবস্থা করা প্রায় অসম্ভব। ঈশ্বরগঞ্জ পরিবার সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।