বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রুতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা সরানো প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দিন সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) আরও ৫৩ পরিবারের ২৭৩ সদস্যকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়েছে। এসব তথ্য জানিয়েছেন, কক্সবাজারস্থ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, দ্বিতীয় দিন সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এসব রোহিঙ্গাদের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। এ নিয়ে ২ দিনে ৮৮ পরিবারের ৪৫৭ জনকে সরানো হল। প্রথম দিন রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) ৩৫ পরিবারের ১৮৪ জন রোহিঙ্গাকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশেপাশে তাবু টাঙিয়ে আশ্রয় নেয়া ৫৫৮ পরিবারের মোট ২ হাজার ৯৭০ জন রোহিঙ্গাকে সরিয়ে আনা হবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার জানান, প্রথম দিন আনা ১৮৪ জনের মধ্যে যাদের পূর্ব থেকে নিবন্ধন ছিল তাদের স্ব স্ব ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যারা নিবন্ধিত নন তাদের নতুন করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া করে ক্যাম্পে পাঠানো হবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের তথ্য মতে, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী 'আরসা ও আরএসও'র মধ্যে সংঘাতের জেরে শূণ্যরেখার ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশেপাশে তাবু টাঙিয়ে আশ্রয় নেন।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে আসারাসহ অন্তত ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হয় কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ টি অস্থায়ী আশ্রয় ক্যাম্পে। ওইসব ক্যাম্পের সার্বিক দেখভাল ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছে আরআরআরসি (শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার)।
অপরদিকে, তুমব্রু কোনারপাড়া শূণ্যরেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পটির দায়িত্ব পালন করছে আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট কমিটি (আইসিআরসি)। ক্যাম্পটিতে ৬৩০ টি পরিবারে সাড়ে চার হাজারের বেশী রোহিঙ্গা বসবাস করে আসছিল। গত ১৮ জানুয়ারি নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলি-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় রোহিঙ্গা হামিদ উল্লাহ নিহত এবং দুজন আহত হয়েছেন। এ সময় শূন্যরেখার বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের বসতঘর পুড়ে যায়। এরপর তুমব্রু বাজারে তাবু টাঙিয়ে আশ্রয় নেয় তারা। কিন্তু বর্তমানে ওখানে ২৯৭০ জন রোহিঙ্গা পাওয়া গেলেও বাকীরা কোথায় তা বলতে পারছেন না কেউ।