নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে পিপিলিকার পাখা গজিয়েছে। আমরা কাউকে আন্ডারস্টিমেট করি না। আপনারা ২০০১ থেকে যেভাবে আমাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছিলেন, তাদের উদ্দ্যেশ্যে বলতে চাই জনগণ রায় দিলে ক্ষমতায় যান আপত্তি নেই। তবে নারায়ণগঞ্জে এমন কোন চেষ্টা করবেন না। আপনারা বোমা ব্লাস্ট করিয়েছিলেন, একবার যদি বুঝতে পারি এমন কোন কিছু আবার করতে যাচ্ছেন তাহলে ভাল হবে না।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের চাষাঢ়া রাইফেলস ক্লাবে ছাত্রলীগের এক সভায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান বলেন, ২০০৮ সালে আপনাদের নিজেদের লোক ছিল, মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিলেন। এবার দাঁড়ান সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ২৫ টি সিটও পাবেন না। তারা নিজের দলের নেতাদের হত্যা করে ইস্যু তৈরির চেষ্টা করবে। ওরা কিছু করতে পারবে না। কারন শয়তান কখনও আল্লাহর সাথে পারে না। শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর রহমত আছে। ওরা স্টুপিড, বোঝে না উনি বার বার বাঁচেন কেন। কারণ আল্লাহ বাঁচান।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা আমাদের বলেছিল আপনারা মঞ্চে থাকবেন। আমি বলেছি না আমরা থাকবো না। তোমরা থাকবে এবং বক্তব্য দিবে। আমরা দেখতে চাই আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম সেই রকম শক্তিশালী কীনা। ছাত্রলীগ আমাদের সন্তান সংগঠন। তাদের উৎসাহীত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আগামী ১৮ তারিখ দুপুর আড়াইটায় ওসমানী স্টেডিয়ামে ছাত্রলীগ সমাবেশ ডেকেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই ওসমানী স্টেডিয়ামে যেন সেদিন স্মরণ কালের শ্রেষ্ঠ সমাবেশ হয়। আমরা দেখতে চাই ছাত্রলীগ নেতারা কী বলে। অনেকে বলে কমিটি নেই, কমিটি লাগে না। আমি যখন ছাত্রলীগ করি তখন কোন কমিটি ছিল না। আমি যখন তোলারাম কলেজের ভিপি পদে নির্বাচন করি আমারই এক চাচা ছাত্রলীগ থেকেই আমার বিরুদ্ধে আরেকজনকে দাঁড় করিয়েছিল।
তিনি বলেন, আমাকে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল আমি দেয়াল টপকে পালিয়ে এসেছিলাম। আমাকে মন্ত্রী করতে চেয়েছিল আমি হইনি। আমরা নিজেদের নেতা ভাবিনি এখনও ভাবতে চাই না। অনেকে ডাকলে দশটা লোকও আসে না কিন্তু নিজেদের নেতা ভাবেন। ছাত্রলীগ নেতাদের বলব যদের সামনে আনবেন সিএস আরএস পরর্চা দেখে আনবেন। আমরা দেয়র মত লোক চাই। খাই খাই লোক চাই না।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছেন শেখ হাসিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশ। আর আফগানিস্তান বাংলাদেশ বানানের জন্য লন্ডন থেকে চেষ্টা চলছে। কথায় আছে এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়। আপনারা যখন সিদ্ধান্ত নেন তখন সময় লাগে না। আমরাও আপনাদের মত ছিলাম।
শামীম ওসমান বলেন, আমি অবাক ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতােদর সাথে আলাপ করেছিলাম তাদের কেন সভাপতি সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তা বোঝার জন্য। আমি মুগ্ধ হয়েছি যে সঠিক ছেলেদের জাতির পিতার কন্যা বেছে নিয়েছে। ছাত্ররা বারবার দেশের জনগণকে নেতৃত্ব দিয়েছে। তাদের মধ্যেও সেই কোয়ালিটি রয়েছে বলে আমার মনে হয়। সেই জ্ঞান সততা ও সাহস তাদের আছে।
আওয়ামী লীগের সৃষ্টি হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। এই বায়তুল আমানে বাংলাদেশের সংবিধানের খসড়া লেখা হয়েছে। অনেকে স্বাধীনতার ঘোষক হতে চায়। ওরা চায় নারায়ণগঞ্জ থেকে একটা ম্যাসেজ থ্রো করতে। যারা জঙ্গিবাদ মৌলবাদ করতে চায় সে সমস্ত শক্তিকে রুখে দিতে ছাত্রলীগ যে প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে, আমি মুগ্ধ তাদের চিন্তাধারা দেখে।
এই ছাত্রলীগ বার বার রক্ত দিয়েছে। এরাই হাতে অস্ত্র নিয়ে ঘরে ঘরো দুর্গ গড়েছে। আমরাও রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা সুশৃঙ্খল ছাত্রলীগ দেখতে চাই। যারা আছি, আমরা সেদিন ব্যাপকভাবে উপস্থিত হবো আমাদের সন্তানদের দেখার জন্য। আমরা না থাকলেও যেন আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম থেমে না থাকে আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে চাই।
তিনি আরো বলেন, এখন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে সারা পৃথিবীর ইকোনমি ভেঙে পড়েছে। তারপরেও আমাদের দেশকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি জায়গায় নিয়ে গেছেন। তিনি বারবার বলছেন এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখবেন না। সারা পৃথিবীতে ৩০টির মত দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। আমাদের হাতে ফোন আছে কিন্তু আমরা চালাতে পারি না। তবে ওরা ঠিকই পারে। ওরা আমাদের চেয়ে অনেক আধুনিক। ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলে আমাদের মনে হয়েছে ওরা অনেক আধুনিক।