চাঁদপুর জেলাধীন ফরিদগঞ্জ উপজেলার পৌরসভাসহ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন খালে পানি না থাকায় চাঁদপুর সেচ প্রকল্পভুক্ত সকল স্থানে বোরো আবাদ ব্যাহত হওয়ার ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খননের কাজ শুরু করেছে এলাকাবাসীসহ সকল এলাকার ইউপি সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) উপজেলার ৬ নং গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড খাজুরিয়া বাজারে এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি নুরুন্নবী নোমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রবীর চক্রবর্তী।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ জানান, তার ইউনিয়নসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের শত শত হেক্টর জমিতে সেচ পানির অভাবে অদ্যবদি বোরো আবাদ করতে পারছে না। তাই আমরা ভরাট হয়ে যাওয়া খালে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন শুরু করেছি। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে ইউনিয়নের অন্তত ২০টি স্থানে প্রতিবন্ধকতা দূর করার সাথে সাথে খনন কাজ শুরু করেছি।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে রোরো আবাদের জন্য জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সেচ প্রকল্পভূক্ত খালে পানি আসার কথা থাকলেও ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত উপজেলা পূর্বাঞ্চলের গুপ্টি পূর্ব, গুপ্টি পশ্চিম, রূপসা উত্তর, রূপসা দক্ষিণ এবং পৌর এলাকায় কয়েকটি ওয়ার্ডে শত শত একর ফসলি জমি তৈরির পরও পানির অভাবে ধানের চারা লাগাতে পারছে না চাষীরা।
এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, কৃষি বিভাগের লোকজন, পাউবো ও বিএডিসি প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়।
বৈঠকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানগণ খালগুলোর বর্তমান চিত্র তুলে ধরে বলেন, দখলে ও দূষণে প্রতিটি ইউনিয়নে সেচ খালগুলো অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। তাছাড়া অনেক খাল রয়েছে বহু বছর খনন করা হয় না। এগুলো ইতিমধ্যেই ভরাট হয়ে যাওয়া এবং ন্যবতা না থাকায় এই দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা নুরে আলম জানান, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পানি উন্নয়ন বোর্ড পানি না ছাড়ায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এখন বোরো আবাদের জন্য এই পর্যন্ত ৬০৮টি সেচপাম্প চালু রয়েছে। ফলে খালে যে পরিমাণ পানি রয়েছে তা দিয়ে সেচপাম্পগুলো চলার কারণে পূর্বাঞ্চলে খালগুলোতে পানি যাচ্ছে না।
এদিকে ভুক্তভোগীরা জানান, একমাসের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও খালে পানি না থাকায় তারা বোরো আবাদ থেকে বিরত। পরিস্থিতি যা দেখা যাচ্ছে, তাতে তাদের জমিগুলো এবছর আবাদ শূন্য থাকতে পারে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান এ বিষয়ে জানান, সেচখালে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন কর্মসূচী গ্রহণের জন্য জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধ করেছি। এছাড়া আগামীতে ৪০ দিনের কর্মসূচীসহ টি আর কাবিটার প্রকল্পকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।