আইয়ুব বিরোধী গণআন্দোলনের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক (তৎকালীন রিডার) সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা’র সমাধিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়েছে। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মোঃ শাহ্ আজম। এ সময় জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এ্যাডঃ শামসুল হক টুকু, এমপি এবং রাবির ভিসি অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।
এ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে সাংবাদিকদের অনুরোধে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় রবির ভিসি বলেন, আবহমান কাল ধরে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে আস্থা ও নির্ভরতার সম্পর্ক চর্চিত হয়ে এসেছে। এরই প্রতিফলন ড. শামসুজ্জোহার আত্মত্যাগ। যুগ যুগ ধরে ছাত্র ও শিক্ষকেরা এই দৃষ্টান্ত অন্তরে লালন করবে ও অনুসরণ করবে। যেকোনো বিপ্লবে বা জাতীয় আন্দোলনে ড. শামসুজ্জোহার আত্মদান ছাত্র-শিক্ষকসহ সমগ্র জাতিকে প্রেরণা জোগায়। ১৮ ফেব্রুয়ারি দিনটি কেবল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়। দিবসটির উদযাপন বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া দরকার। এক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন উদ্যোগী হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সদিচ্ছায় এ তাৎপর্যপূর্ণ দিবসটিকে জাতীয়ভাবে পালন করা সহজ হবে।
উলেখ্য, ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারামুক্তি ও সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যার প্রতিবাদসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবিটি আইয়ুব বিরোধী গণআন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাবির শিক্ষার্থীরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করতে চাইলে মারমুখী সশস্ত্র বাহিনীর হাত থেকে শিক্ষাথীদের বাঁচাতে রাবির তৎকালীন প্রক্টর সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা শিক্ষার্থীদের সামনে গিয়ে সেনাবাহিনীকে নিজের পরিচয় দেন ও শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু হঠকারী সেনাবাহিনী ড. শামসুজ্জোহাকে গুলি করে এবং মিউনিসিপ্যাল অফিসে নিয়ে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। শিক্ষার্থীদের প্রাণ বাঁচাতে আত্মদানকারী এ মহান শিক্ষক বাংলাদেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী।