‘ওরা আমাকে বাঁচতে দিলো না’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে টাঙ্গাইলে সীমান্ত সরকার পরিমল (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের ঘারিন্দা রেল স্টেশনে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি টাঙ্গাইল শহরের প্যাড়াডাইসপাড়া এলাকার পলান সরকারের ছেলে।
জানা যায়, সীমান্ত তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালেহ মোহাম্মদ ইথেন এবং বিথী নামের এক নারীর ছবি দিয়ে লিখেন, ‘ওরা আমাকে বাঁচতে দিলো না। শেষ পর্যন্ত আমাকে মরতে হলো। পারলে আপনারা ওদের বিচার করেন’। এরপরই সীমান্ত সরকার পরিমল ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পরিমল টাঙ্গাইল শহরের ছয়আনি বাজারে ‘সীমান্ত সুইটস’ নামের দোকানের মালিক ছিলেন। স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের এক পর্যায়ে দুই সন্তানকে নিয়ে তিন বছর আগে তার স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে যান। নিহত ব্যবসায়ী পরিমল বন্ধু সালেহ মোহাম্মদ ইথেনের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ধার নেন। সেই টাকার জন্য প্রায় সময় সীমান্তকে চাপ প্রয়োগ করতেন ইথেন। এছাড়া পরিমল বিথী নামের ওই নারীকে নিয়ে সম্প্রতি ফেসবুকে আপত্তিকর কথা লিখেন। এজন্য ওই নারী তার বিরুদ্ধে আইসিটি মামলাও করেছেন। একদিকে পাওনাদারের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ, অন্যদিকে মামলার চাপ। এ কারণেই তিনি (পরিমল) আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছেন।
টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালেহ মোহাম্মদ ইথেন জানান, পরিমল তার কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন হলেও সেই টাকা পরিশোধ না করে তাকে না জানিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি পরিমলের স্ত্রীকে জানান টাকা না দিতে পারলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি তার নামে লিখে দিতে। এ সপ্তাহে ওই প্রতিষ্ঠান তার নামে লিখে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিমল আত্মহত্যা করবে এমনটা তিনি ভাবতে পারেননি।
টাঙ্গাইল রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এএসআই) ফজলুল হক জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।