ময়মনসিংহে আমের মুকুলে ছেয়ে গেছে, বাম্পার ফলনের আশা
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:৪৮ | অনলাইন সংস্করণ
শামছুজ্জামান বাবুল, নান্দাইল (ময়মনসিংহ)
গাছে গাছে সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুল ভরপুর। চারাগাছ থেকে শুরু করে ছোট, বড়, মাঝারি সব গাছেই ফুটেছে মুকুল। আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিক। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে সুগন্ধ। শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে সোনালি হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। মৌমাছির দলেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। পাখিদেরও যেন আনন্দের কমতি নেই, নেচে গেয়ে বেড়াচ্ছে এক ডাল থেকে আরেক ডালে। আর বাম্পার ফলনের স্বপ্ন চোখে মুখে ভেসে উঠেছে কৃষকসহ সকল শ্রেণির মানুষের। এমনই দৃশ্য চোখে পড়ছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সর্বত্র এলাকায়। চোখ যতদূর যায় গাছে গাছে ফুটে রয়েছে আমের মুকুল আর মুকুল। যেন বসন্তের পরিপূর্ণ ইমেজ ধরে রেখেছে আমের মুকুলে।
জানা যায়, সকল শ্রেনির মানুষের পছন্দের ফল আম। এবছর শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকায় আগেভাগেই চারদিক ছেয়ে গেছে আমের মুকুলে। নান্দাইল উপজেলা শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামেও ফুটে উঠেছে এক অপরুপ দৃশ্য। শহরের ছাদবাগানসহ বিভিন্ন এলাকার ছোট বড় আম বাগানগুলোতে থোকায় থোকায় বিছানা পেতে রয়েছে আমের মুকুল। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি। গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ দেখে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন বুনছেন গাছের মালিকেরা। সেই সাথে আমের বাগান মালিকেরা ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের রায়পাশা গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন ও সিংরইল ইউনিয়নের ফকির বাজার এলাকার বাগান মালিক আব্দুল লতিফ জানান, এ মৌসুমে কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। তাদের বাগানে নতুন চারা গাছে ফুটেছে অসংখ্য মুকুল। থোকা থোকা মুকুলের ভারে নুয়ে পড়ছে ডালপালা। আম বড় হওয়ার আগেই মাচা তৈরি করে দিতে হবে। গাছে গাছে সোনালী মুকুলে তাদের মুখে ফুটেছে সোনালী হাসি। বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
নান্দাইল উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম জানান, এ উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ২৫টির মতো বাগান রয়েছে। এছাড়াও উপজেলার সর্বত্র এলাকায় অসংখ্য আমগাছ রয়েছে। এ মৌসুমে আমগাছে ব্যাপক মুকুল ফুটেছে। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
নান্দাইল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান জানান, আমের মুকুল আসার আগে-পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং রোদ্রজ্জ্বল থাকায় আমের মুকুল সস্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে। যদি রোগবালাই, পোকা মাকড়ের আক্রমন, কালবৈশাখী বা আগাম ঝড় না ঘটে তা হলে এ মৌসুমে বাম্পার ফলন হবে।