পটিয়ায় রেস্তোরা গুলশান মেহেরিন নিয়ে উত্তেজনা, সংঘর্ষে’র আশংকা
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৩, ১৫:২৩ | অনলাইন সংস্করণ
পটিয়া প্রতিনিধি
পটিয়া পৌর সদরে অভিজাত রেস্তোরা গুলশান মেহেরিনের ১০ কোটি টাকার জায়গা দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে দুটি পক্ষ পাল্টপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেন। সন্ধ্যায় গুলশান মেহেরীণে প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক হাসান উল্লাহ চৌধুরী ও জায়গার মালিক ডা: কামাল উদ্দিন চৌধুরীর চাচাতো ভাইয়ের পুত্ররা সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, পটিয়া পৌরসভা ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ডা: কামাল উদ্দিন চৌধুরী মৃত্যু’র পূর্বে তার একমাত্র সন্তান মুস্তাফা কামালের নামে যাবতীয় সম্পত্তি দানপত্র করে দেন। পরবর্তীতে মুস্তাফা কামাল অবিবাহিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিলে তার একমাত্র বোন কানিজ ফাতেমা ও ১২ চাচাতো ভাইসহ ওয়ারিশ রেখে যান। ডা: কামাল উদ্দিন চৌধুরী জীবিত থাকা অবস্থায় উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক হাসান উল্লাহ চৌধুরী’র প্রায় ১৯ শতক জায়গায় তিন তলা বিশিষ্ট দোকান ও ভাড়া ঘর নির্মান করেন। দীর্ঘদিন উপজেলা যুবলীগ নেতা হাসান উল্লাহ চৌধুরী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। হাসান উল্লাহ প্রতি মাসে দোকান ও বাসাভাড়া বাবদ ইসলামিক ফরায়েজ মোতাবেক ভাড়া টাকা কানিজ ফাতেমার ব্যাংক একাউন্টে ৭০ হাজার টাকা, বাকী ৭০ হাজার টাকা ১২ চাচাতো ভাই ওয়ারিশগনের নিকট প্রদান করে আসছে। পরবর্তীতে কানিজ ফাতেমা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় তার ভাগে জায়গা বিক্রির প্রস্তাব দিলে যুবলীগ নেতা হাসান উল্লাহসহ ১২ চাচাতো ভাই তার ক্রয় করার সম্মতি জানান। উভয় পক্ষে’র মধ্যে কানিজ ফাতেমার অংশের জায়গার মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা বিক্রি করার বিষয়টি চুড়ান্ত হয়। উক্ত জায়গা ক্রয় করার জন্য যুবলীগ নেতা ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি টাকার পে-অর্ডার করে কানিজ ফাতেমাকে জায়গা রেজিষ্ট্রি করার জন্য অবহিত করলে সে রেজিষ্ট্রি না দেওয়ার বিভিন্ন অজুহাত দেখায় এবং কানিজ ফাতেমা আবছার উদ্দিন নামের এক ভূমিদস্যুকে উক্ত জায়গা বাবদ ৫০ লাখ টাকা প্রদানের দাবি করেন।
পরবর্তীতে এ বিষয় নিয়ে হাসান উল্লাহ চৌধুরী কানিজ ফাতেমার বিরুদ্ধে পটিয়া সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা (নং২৭/২০২৩) দায়ের করেন। আদালত কানিজ ফাতেমাকে ১৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন। তারা চান তাদের ভাই বোনের মধ্যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। জায়গা বিক্রি বিষয়ে উভয় পক্ষে যে আলাপ আলোচনা হয়েছে সে অনুযারী বোন কানিজ ফাতেমার কাছ থেকে জায়গা খরিদ করবেন। একটি ভূমিদস্যু চক্র তাদের বোন কানিজ ফাতেমাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে। এ বিষয় প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গুলশান মেহেরীণের পরিচালক উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক হাসান উল্লাহ চৌধুরী, জাগির হোসেন, হাবিবুল্লাহ প্রকাশ বুলবুল, ইউসুফ চৌধুরী, মাহাবুবুল আলম, রায়হান উদ্দিন।
অপরদিকে, থানার মোড় নোঙল রেস্তোরায় কানিজ ফাতেমা পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন। লিখিত বক্তব্যে বলেন, কানিজ ফাতেমা দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। ডাক্তার কামালের কোন ছেলে না থাকায় তার সম্পত্তির মালিক হয় ডাক্তার কানিজ ফাতেমা। পটিয়া পৌরসভার পোস্ট অফিস মোড় এলাকায় গুলশান মেহেরিন নামে তাদের একটি হোটেল রয়েছে। এটি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হাসান উল্লাহ ভাড়ায় নিয়ে পরিচালনা করেন। গত কয়েক মাস ধরে হাসান উল্লাহ ভাড়াও বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি কানিজ ফাতেমার নামে এ সম্পত্তি নামজারীও হয়েছে। যুবলীগ নেতা হাসান উল্লাহ এ নামজারী বাতিল করতে বিভিন্ন পায়তারা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া কানিজ ফাতেমার জায়গাটি অর্ধেক দামে খরিদ করতে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক হাসান উল্লাহ কানিজ ফাতেমাকে বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করে এবং এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন ।