চাঁদপুরে জাটকা নিধন করায় ৪৪ জেলে আটক

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৩, ১৪:২৫ | অনলাইন সংস্করণ

  শওকত আলী, চাঁদপুর

চাঁদপুর নৌ-সীমানায় ২দিনে মেঘনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশের পোনা জাটকা নিধন করার অপরাধে পৃথক অভিযানে ৪৪জন জেলেকে আটক করেছে চাঁদপুর নৌ-পুলিশ। 

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাটকা রক্ষায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ধরার অপরাধে ২দিনে পৃথক অভিযানে প্রথমে ২৯জন ও পরে ১৫জনসহ ৪৪জন জেলেকে আটক করেছে নৌ পুলিশ। এ সময় জেলেদের কাছ থেকে এবং নদীতে পেতে রাখা ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ৯শ’ মিটার কারেন্টজাল, ৫টি মাছ ধরার নৌকা ও ১৮৮ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়।

শুক্রবার (১০ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, জাটকা রক্ষায় বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভয়াশ্রম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। জাটকা ধরার সময় হাতে নাতে ২৯ জেলেকে আটক করা হয়। আটক জেলেদের মধ্যে ৮জনকে ১ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ১৮জনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মৎস্য আইনে নিয়মিত মামলা করা হয়। এছাড়া ৩ জন শিশু জেলেকে সতর্ক করে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।

অপরদিকে, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ধরার অপরাধে ১৫ জেলেকে আড়াই মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুক্রবার (১০ মার্চ) রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেশমা খাতুন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জেলেরা হলেন- মতলব উত্তর উপজেলার ধলু (৪৫), আবুদস সালাম (৪৫), আনছার আলী (৬৭), ইয়াছিন মোল্লা (৩৭), জুয়েল (৩৫), ময়নাল হক (৩৮), সোহরাব হোসেন (৪০), মো. আল-আমিন (২২), আবদুল কাদির (৩৫), মো. বিল্লাল খান (৪০), কুমিল্লার মেঘনা থানার মো. রাসেল (২২), মো. গোলজার হোসেন (৩৮), শরীয়তপুর জেলার শখিপুর থানার মো. কামাল (২৫), বিল্লাল হোসেন (২৯) ও মো. নাসির (৪০)।

চাঁদপুর সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাঁদপুর মৎস্য অধিদপ্তর ও নৌবাহিনী যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ১৭জন জেলেকে আটক করা হয়। এর মধ্যে মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজিকান্দির সাগর (১৪) ও কুমিল্লার মেঘনা থানার সোহাগ (১৫) অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য ১৫জনকে দুই মাস ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সন্ধ্যায় জব্দকৃত কারেন্টজাল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট, জাটকাগুলো স্থানীয় এতিমদের মাঝে বিতরণ এবং নৌকাগুলো কোস্টগার্ডের হেফাজতে রাখা হয়েছে বলেও জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।

পদ্মা-মেঘনায় জাটকা রক্ষায় সরকার ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। মৎস্য আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।