কাউখালী গৃহহীন মুক্ত ঘোষণার প্রস্তুতি, উদ্বোধনের অপেক্ষায় শত ঘর

প্রকাশ : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

  কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

 "বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ- ২ প্রকল্পের আওতায় দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন-গৃহহীন ছিন্নমূল মানুষকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় আনছেন। 

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অন্যান্য উপজেলার মতো পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায়ও ভূমিহীন ও গৃহহীনদের তালিকা করা হয়।

কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার সুলতানা জানান, ‘ক শ্রেণি’ অর্থাৎ একেবারেই ভূমিহীন ও গৃহহীন ৬০৫ পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের ১ম, ২য় ও ৩য় পর্যায়ে যথাক্রমে ১১০, ২৫০, ২০টি মোট ৩৮০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৩৮০টি গৃহ তৈরী করে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে সনদপত্র ও দলিলসহ ইতিমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত সকল পরিবার পর্যায়ক্রমে পুনর্বাসিত হবে। ৪র্থ পর্যায়ে ২২৫টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে নির্মাণাধীন ঘরগুলোতে তালিকাভুক্ত ২২৫টি ‘ক শ্রেণি’ অর্থাৎ একেবারেই ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে কাউখালীকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
‘ক শ্রেণি’র এই তালিকা  যাচাই- বাছাই করা হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্দেশনা অনুযায়ী কাউখালী উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।

মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রীর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে ২ শতাংশ করে খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে একক গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে গ্রাম বাংলার প্রান্তিক ভূমিহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে সমবায়ভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে রেজিষ্ট্রেশনের কাজ চলছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের সুপেয় খাবার পানি ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাসহ সম্ভাব্য সকল সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্প যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের নির্দেশনা ও ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে একক গৃহ নির্মাণ ও পরিকল্পনা সংক্রান্ত ম্যানুয়েল’ অনুসারে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। গৃহসমূহ নির্মাণ কার্যক্রম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান, কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহের নিগার সুলতানা ও জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা কর্তৃক নিয়মিত পরিদর্শন করা হয়। বিভিন্ন সময়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আবু সাঈদ মিঞা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মানষ কুমার দাস উপস্থিত ছিলেন।

চতুর্থ পর্যায়ে অনুমোদিত সেমিপাকা ঘরগুলোর প্রাক্কলিত ব্যয় ২,৮৪,৫০০.০০ টাকা। চতুর্থ পর্যায়ে বরাদ্দ প্রাপ্ত মোট ২২৫টি গৃহের মধ্যে ১০০টি গৃহ ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। বাকী ১২৫টি গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন করে উপকারভোগীদের প্রদান করা হলে কাউখালী উপজেলা ‘ক শ্রেণির’ ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হবে। 

নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, পরবর্তীতে নদী ভাঙনের ফলে সর্বশান্ত হলে, দূরারোগ্য ব্যাধিতে চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বশান্ত হলে এবং পরিবার বিভাজনের ফলে বসবাসের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকলে তাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হবে।