ফেনীতে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩, ১৫:৫৫ | অনলাইন সংস্করণ
ফেনী প্রতিনিধি
ফেনী জেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি ও ইপসার সহযোগিতায় এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ের কবল থেকে মুক্তি পেল ১০ম শ্রেনীর এক ছাত্রী। জনৈক ব্যাক্তি মুঠোফোনে ফেনী জেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ নেটওয়ার্কভূক্ত একটি সংগঠনের প্রতিনিধিকে জানান, দশম শ্রেণীর একজন ছাত্রীর মতের বিরুদ্ধে তার অভিভাবক বিয়ে ঠিক করেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে বিভিন্ন সুত্র থেকে তথ্য নিয়ে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা মিলে। এরপর বিষয়টি উপপরিচালক মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ফেনী ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, ইউএনও এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনকে অবগত করা হয়।
সোমবার (২০ মার্চ) বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন, রান্নার কাজ চলছে। মেহমান আসা শুরু হয়েছে, বর ও বরযাত্রী আসার অপেক্ষা। এ সময় বিয়ে বাড়িতে হাজির হন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ইউপি সদস্য মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সুপারভাইজার নুরুল করিম ও অফিস সহকারী শহীদুল ইসলাম। তারা কনের বাল্যবিবাহ সংক্রান্ত বিষয় জানতে চাইলে সাথে সাথে কনেপক্ষ রোটারী পাবলিকের একটি এভিডেভিড দেখায়। এর মাধ্যমে মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে প্রমাণ করতে চান। কিন্তু কনে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়ার কারণে তার বয়স প্রমাণের দলিল উপস্থাপন সহজ হয়। অবশেষে দাগনভূঁঞা উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রোটারী পাবলিকের এভিডেভিড বাতিল ঘোষণা করা হয়। পরে বাল্যবিয়েটি বন্ধ করা হয়।
সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে রাজাপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড রাজাপুর ঘোনা এলাকায় ওই বাল্যবিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। এ সময় ওই ছাত্রীর বাবা শরীয়ত উল্ল্যাহ এর নিকট হতে মেয়ের বয়স ১৮ পূর্ণ না হওয়ার আগে বিয়ে দেবেন না মর্মে অঙ্গিকার নেয়া হয়।
ফেনী মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাছরিন আক্তার জানান, ফেনীতে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ করছে এমন একটি সংস্থার প্রতিনিধির তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি ফেনীর দাগনভুঞা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া একজন ছাত্রীর সাথে একই উপজেলার মাতুভূঁঞা ইউনিয়নের মোমারিজপুর গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে জহিরুর ইসলামের (৩৪) বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমাদের জেলা অফিস থেকে প্রতিনিধি পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে বিয়ের প্রস্তুতি ও মেয়ের বয়স সংক্রান্ত এভিডেভিড এর কপি দেখা হয়। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে বিয়েটি বন্ধ করা হয়েছে।