কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে একটি মামলার প্রেক্ষিতে স্বামীকে না পেয়ে ২ শিশুসহ স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ঈদগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গিয়াস উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে তাকে প্রত্যাহার করা হয় এবং তাকে পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়া ২ শিশুসহ ওই নারীকে থানা হাজতে রাখার বিষয়টি নজরে এসেছে। ওই নারী ফরিদা ইয়াসমিন ঈদগাঁও উপজেলার পূর্ব ফরাজী পাড়া এলাকার মৃত নজির আহমেদের ছেলে শাহজাহানের স্ত্রী। একটি মামলায় এজাহারভূক্ত আসামি ফরিদা ইয়াসমিনকে পুলিশ গ্রেপ্তারের বিষয়টি আইনগত কোন জটিলতা নেই। তবে ২ শিশুসহ নারীকে থানায় এনে হাজতে রাখা এবং আদালতে প্রেরণ করার বিষয়টি পুলিশের প্রবিধান মতে হয়নি। এ ঘটনায় বুধবার (২২ মার্চ) পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনার তদন্তের পর বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে এসআই গিয়াস উদ্দিনকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এব্যাপারে পুলিশের বিধান মতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে, এ ঘটনায় ঈদগাঁও থানার ওসি মো. গোলাম কবিরের প্রত্যাহার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ জনগণ। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের ঈদগাঁও স্টেশনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধন পরবর্তী প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, ঈদগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ, জেলা যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবির চৌধুরী হিমু, সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা মিজানুল হক, নির্যাতিত নারী ফরিদা ইয়াসমিন।
ঈদগাঁওর জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ জানান, সোমবার পূর্ব ফরাজী পাড়া এলাকায় মৃত নজির আহমেদের ছেলে শাহজাহান ও মৃত আবু শামার ছেলে হারুন অর রশীদের মধ্যে নলকূপের পানি চলাচল নিয়ে বাকবিতন্ডা হয়। এ সময় শাহাজাহান নামের এক যুবক হারুন অর রশীদকে (নীলকার্ড) নখ কাঁটার যন্ত্র দিয়ে আঘাত করে। হারুন অর রশীদকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে খবর পেয়ে ঈদগাঁও থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বিকেলে শাহাজাহানের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় শাহাজাহানকে না পেয়ে তার স্ত্রী ফরিদা ইয়াসমিনসহ দুগ্ধজাত এক শিশু এবং ২ বছরের আরো এক শিশুকে থানায় নিয়ে যায়। পরে ভিকটিম হারুন অর রশীদের স্বজনদের থানায় ডেকে নিয়ে নাটকীয় কায়দায় মামলা রেকর্ড করে আদালতে সোপর্দ করে। বুধবার আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।