ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মানুষের হৃদয়ে স্বাধীনতার সাহস জুগিয়েছেন বঙ্গবন্ধু: শিক্ষামন্ত্রী

মানুষের হৃদয়ে স্বাধীনতার সাহস জুগিয়েছেন বঙ্গবন্ধু: শিক্ষামন্ত্রী

বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য জাতির পিতা তার জীবনের ২৩টি বছর পাকিস্তানের শাসন শোষণের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম করেছেন এবং সে সময়ে তার যে আত্মত্যাগ, তার বিনিময়ে আমরা সমগ্র বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। তিনি ছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। তিনি সমস্ত দেশ ঘুরে সকল মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার যে স্বপ্ন, তাকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য ইচ্ছা ও সাহস জাগিয়ে তুলেছিলেন প্রতিটি হৃদয়ে।

রোববার (২৬ মার্চ) সকালে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত কুচকাওয়াজ ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন সময়ে মাইল ফলক পেরিয়ে ভাষার আন্দোলন, সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফা, গণ অভ্যুত্থান, ৬৯ ও ৭০ এর নির্বাচন করেছেন। এ সমস্ত ধাপ পেরিয়ে আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম ৭১ এ। যখন ৭০ এর নির্বাচনের ফলাফল পাকিস্তানের শোষক ও শাসকেরা মেনে নেয়নি, যখন জনপ্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি বরং বাঙালির উপরে ২৫ মার্চ ১৯৭১ চাপিয়ে দিয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাসে এক জঘন্যতম গণহত্যা, সেই অবস্থায় বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কি করতে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞা ও প্রজ্ঞা দিয়ে বাঙালিকে প্রস্তুত করার জন্য ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে অবস্মরণীয় ভাষণ দিয়েছিলেন। যার মাধ্যমে সমস্ত নিরস্ত্র বাঙালি সর্বোচ্চ যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। একটি গেরিলা যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার যে সার্বিক দিক নির্দেশনা বঙ্গবন্ধু দিয়ে গিয়েছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে গণহত্যার জবাবে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।

দীপু মনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শিতা, প্রজ্ঞা ও তার সাহস বীরত্বের কারণেই তাকে নেতা মেনে সাড়ে ৭ কোটি বাঙালি জীবন মরণের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সে যুদ্ধে আমরা ৩০ লাখ মানুষকে হারিয়েছি। লাখ লাখ নারী চরমভাবে নির্যাতিত হয়েছে। দেশের মধ্যে ৩ কোটিরও বেশী মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এক কোটিরও বেশী মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় গ্রহণ করেছে। সারাদেশ জুড়ে ছিল বধ্যভূমি ও নির্যাতন খ্যাত গণকবর। ওই সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতার অসীম সাহস ও বীরত্বের মধ্য দিয়ে, সারা বাংলার মানুষের বীরত্বের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে আমরা আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছিলাম।

মন্ত্রী বলেন, আজকে প্রতিটি শিশু স্কুলে যেতে পারে, বছরের প্রথমে বই পায়। চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক আছে, ৩০ রকমের ঔষধ পাওয়া যায়। আমাদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ব্যপক উন্নতি হয়েছে। যে কারণে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে, শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার কমেছে। মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। সেটি বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই বঙ্গবন্ধু কন্যা এগিয়ে চলেছেন বলেই সম্ভব হয়েছে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ ওয়াদুদ, স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ সৈয়দা বদরুন্নাহার চৌধুরী।

চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনকি সম্পাদক অ্যাড. মজিবুর রহমান ভুঁইয়া, চাঁদপুর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. রনজিত রায় চৌধুরী, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এণ্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক তমাল কুমার ঘোষ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সানা উল্যাহসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান যৌথ সঞ্চালনায় ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজ ও সাংস্কৃতিক সংগঠক রফিকুল ইসলাম বাবু। কুচকাওয়াজ ও বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী।

স্বাধীনতা,স্বপ্ন,বাস্তবায়ন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত