চট্টগ্রাম উপকূলীয় বনবিভাগের মহেশখালীর গোরকঘাটা রেঞ্জে গাছ কেটে জবরদখলে ঘের করা প্রায় ৩০০ হেক্টর বনভূমি দখলমুক্ত করলো বনকর্মীরা। গত তিনদিন (২৩ হতে ২৭ মার্চ) দিনে-রাতে মহেশখালীর পানিরছড়ার পশ্চিমে গোরকঘাটা রেঞ্জের ঝাপুয়া বিটের আমবস্যাখালী মৌজার বগাচত্তর ও আন্দারঘোনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব বনভূমি নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়।
এসময় দখলকারীরা বন কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। অভিযানকারিরাও আত্মরক্ষায় শত রাউন্ড গুলি ছুঁড়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান। তিনি জানান, পাহাড়ি বদ্বীপ মহেশখালীর দুর্গম উপকূল এলাকা গোরকঘাটা রেঞ্জের ঝাপুয়া বিটের আমবস্যাখালী মৌজার বগাচত্তর ও আন্দারঘোনা এলাকায় উপকূলীয় বনের সৃজন করা বাইন বাগান কেটে অবৈধ বাঁধ দিয়ে ঘের ও লবণ মাঠ তৈরি করে ভোগদখলে নেয় প্রভাবশালীরা। বন বিটের লোকবল স্বল্পতায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে উল্টো হুমকি দিয়ে এসব দখল কার্যক্রম চালিয়েছিল। এসব ঘটনায় একাধিক মামলা হলেও দখল কার্যক্রম বন্ধ হয়নি, বরং বেড়েছে দখলের পরিধি।
তিনি আরো বলেন, অব্যাহত দখলে উপকূল রক্ষাকারি বাইনগাছ শূন্য হয়ে উঠছিল মহেশখালীর উপকূল তীর। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ডিএফওর (তার নেতৃত্বে) নেতৃত্বে ২৩ মার্চ হতে অর্ধশত বনকর্মী সশস্ত্র অভিযান শুরু করে। এর আগেও অভিযানে গিয়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ, অবৈধ ক্ষমতার দাপটে বিফল হওয়ায় অভিযান সম্পর্কে কাউকে জানানো হয়নি। স্কেবেটর নিয়ে দিনে-রাতে সমানতালে এক ঘের হতে অন্য ঘেরে গিয়ে বাঁধ কেটে দিয়ে বনভূমি গুলো জবরদখলমুক্ত করে নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে।
ডিএফও জানান, অভিযানকালে ভূমিদস্যরা বনকর্মীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। জবাবে বনকর্মীরাও শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্র ভঙ্গ করে দেয়।
সরকারি জমি দখলমুক্ত করার অভিযানে বনবিভাগের কক্সবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ আবুল কালাম আজাদ, গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আইয়ুব আলী, মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা খাঁন জুলফিকার আলীসহ উপকূলীয় বন বিভাগের অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারী ৩৫টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সহস্রাধিক গুলি ও কার্তুজসহ অংশগ্রহণ করে।
এদিকে, উচ্ছেদকৃত জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে বন আইন অনুযায়ী বন মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।