ঝিনাইগাতীতে মুরগির খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে খামারীরা
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৫:০৯ | অনলাইন সংস্করণ
আরএম সেলিম শাহী, ঝিনাইগাতী প্রতিনিধি
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক লোকসানে পরেছে খামারীরা। ফলে খামার ছেড়ে দেওয়ার উপক্রম হয়েছে তাদের।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে ২০৪ টি এবং ৩৮টি লেয়ার খামার রয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ডিলারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কাজী ফিড কোম্পানির ব্রয়লার মুরগির খাদ্যের দাম বর্তমানে ৩৬’শ আর লেয়ার ২৯’শ ৫০ টাকা। তবে গত এক বছর আগে ব্রয়লার খাদ্যের দাম প্রতি বস্তা ২২৫০ টাকা আর লেয়ার ১৭৫০ টাকা ছিল।
এছাড়াও ৫০ কেজি লেয়ার মুরগির খাদ্যের দাম গতবছর ১৭৫০ টাকা থাকলেও বর্তমান বাজার মূল্যে ৫০ কেজি ২৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এ অস্বাভাবিক খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিরা পড়ছেন চরম বিপাকে।
উপজেলার সদর ইউনিয়ন সারি কালিনগর গ্রামের জ্বীম লেয়ার ফার্মের খামারী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তার ২'টি খামারে ৮ হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। প্রায় ১৩ বছর আগে ১ টি ফার্মে ১৮’শ লেয়ার মুরগি দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ডিম ও লেয়ার মুরগি বিক্রিতে লাভ হওয়ায় ব্যবসাটি ধরে রাখেন। তার খামার থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ডিম ও মুরগি রপ্তানি করা হয়। মেটানো হত আমিষের চাহিদা। পরবর্তীতে একই গ্রামে আরও একটি খামার গড়ে তোলেন তিনি।
বর্তমানে তার ২টি খামারে ৮ হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন তার খামার থেকে ৬ হাজার মুরগী ডিম দেয়। ডিম উৎপাদন হয় প্রতিদিন ৪৮’শ পর্যন্ত। তার ৮ হাজার মুরগির মধ্যে ২ হাজার মুরগি এখনো ডিম দেওয়ার পুরোপুরি উপযোগী হয়নি।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়, তার খামার থেকে স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকারগণ ডিম ক্রয় করে থাকেন প্রতি পিছ ৯ টাকা ৩০ পয়সা দামে। আর ৪৮’শ ডিমের দাম দাড়ায় ৪৪ হাজার ৬৪০ টাকা। দৈনিক তার দুইটি খামারে ৫৬ হাজার ৫০ টাকা খাদ্যের প্রয়োজন হয়। তিনি খামার গড়ে তোলায় নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি হয়েছে আরও বেশ কিছু পরিবারের কর্মসংস্থান। বর্তমানে তার খামারে শ্রমিক হিসেবে ৬ জন কাজ করেন।
প্রতিমাসে তার দুটি খামারে ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ টাকার খাদ্য বাবত খরচ প্রয়োজন হয়। এছাড়াও মেডিসিন, শ্রমিক, বিদ্যুৎ বিল ৯২ হাজার টাকা, সর্বমোট প্রায় ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা প্রতি মাসে ব্যয় হয় তার।
গড়ে সব মিলিয়ে ৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা প্রতিমাসে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফলে ব্যবসা ধরে রাখতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি।