বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় এনে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী 

প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০৩ | অনলাইন সংস্করণ

  পিরোজপুর প্রতিনিধি

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় এনে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশ ছিল একটি প্রাকৃতিক দূর্যোগের রাষ্ট্র। সেই বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন একজনই, তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এবং রক্তের উত্তরসূরী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। 

শনিবার (১ এপ্রিল) সকালে স্থানীয় হুলারহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২৩ উদ্বোধন ও নৌ র‌্যালি উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, তিনি থাকায় বাংলাদেশ আজ উন্নত ও সমৃদ্ধ। আমাদের বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় এনে এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি না থাকলে আজকে আড়াই ঘন্টায় পদ্মা সেতু পার হয়ে পিরোজপুর আসা যেত না। তিনি না থাকলে ছয় লেনের রাস্তা হতো না, পাটগাতি ব্রীজ হতো না, বেকুটীয়া ব্রীজ হতো না, বলেশ্বর ব্রীজ হতো না, পিরোজপুরে বিশ্ববিদ্যালয়, হাউজিং স্টেট কিছুই হতো না। কাজেই যিনি আমাদের দিয়েছেন তাকেই টিকিয়ে রাখতে হবে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য। তার কোন বিকল্প নাই, শেখ হাসিনার বিকল্প নাই। 

মন্ত্রী আরও বলেন, আবার স্বাধীনতা বিরোধীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। তারা বিভিন্ন বিদেশ থেকে ফর্মূলা এনে এরে দিয়ে কথা বলায় ওরে দিয়ে কথা বলায়।

এসময় দেশের সব মানুষের কাছে পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ইলিশ পোঁছানো সরকারের লক্ষ্য জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় জনগণকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করা। অব্যবস্থাপনার কারণে মা ইলিশ নিধন করা, জাটকা ইলিশ ধরে ফেলার কারণে, ইলিশের ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি আমরা হয়েছিলাম। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং মৎস্য বিভাগের সহায়তায় এই ইলিশের উৎপাদন এমনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যে বিশ্বের টোটাল ইলিশের ৮০ ভাগ বাংলাদেশ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে। আমরা চাই স্বাদ এবং সৌন্দর্য পরিপূর্ন এ ইলিশকে প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে। সে কারণে জাটকা সংরক্ষণ করতে হবে। ক্রমাগত এ সকল অভিযানের কারণে অবৈধ কারেন্ট জালের উৎপাদন বহুলাংশে বন্ধ হয়েছে এবং অবৈধ ও অসাধু মৎস্য শিকারীদের দৌরাত্ম কমে গিয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর ও নৌ পুলিশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে দেশে আজ মাছের প্রাচুর্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরের আমিষের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, জাটকা আহরণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। সারা বিশ্বে উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ ভাগ আমাদের দেশে উৎপাদিত হয়। এ সম্পদ রক্ষা শুধু দাপ্তরিক দায়িত্ব নয়, নৈতিক কর্তব্যও বটে। জাটকা আহরণ বন্ধ করতে না পারলে এক সময় ইলিশ আর থাকবে না। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে বলতে হবে এই আকৃতির, এই রঙের, এই স্বাদের একটা মাছ ছিল, যে মাছের নাম ইলিশ। আমরা নিশ্চয়ই সেটা হতে দিতে পারি না।

মন্ত্রী জেলেদের উদ্দেশ্য করে বলেন, বহু প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়েছিলো সেগুলো সংরক্ষণ করে ৩৫ প্রজাতির মাছ গবেষণার মাধ্যমে পুনঃউদ্ধার করা হয়েছে। ২০০৮ সালে উৎপাদন ছিলো ২ লাখ ৯৮ হাজার মট্রিক টন, ২০২২ সালে যা ৫ লাখ ৬৭ মট্রিক টনে উপনিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। বিশ্বের ৮০ ভাগ ইলিশই বাংলাদেশে উৎপাদন হয়। আপনারা আমার দিক তাকিয়ে হলেও জাটকা নিধন বন্ধ রাখুন। এতে এই অঞ্চলের মুখ উজ্জল হবে। আমরা বিশ্বের ৫২টি দেশে মাছ রপ্তানি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করছি। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।

মন্ত্রী এরপর সাড়ে বারোটায় কচা নদীতে এক বর্ণাঢ্য নৌর‌্যালীতে অংশ নেন। এতে নৌপুলিশ, কোষ্টগার্ডসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলেদের শতাধিক নৌযান অংশ নেয়।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল রেঞ্জের নৌ পুলিশ ডিআইজি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান পিপিএম (বার), মৎস্য অধিদপ্তর মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক, নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন এস এম এনামুল হাসান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান পিপিএম সেবা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসাহাক আলী খান পান্ন, আইনজীবী সরদার ফারুক আহম্মেদ, মুক্তিযোদ্ধা গৌতম চৌধুরী, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবদুল বারি, জেলা যুবলীগ সভাপতি আক্তারুজ্জামান ফুলু, জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগে আহবায়ক সিকদার চাঁন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. কামরুজ্জামান খান শামীম, জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মীর মোঃ ফারুক আব্দুল্লাহ, প্রেসক্লাব সভাপতি শফিউল হক মিঠু, সাধারণ সম্পাদক এস এম তানভীর আহম্মেদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অনিরুজ্জামান অনিক ও সম্পাদক ইফতেখার মাহমুদ সজলসহ নেভী, কোষ্টগার্ড,  নৌ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, গণমাধ্যম কর্মী ও  স্থানীয় মৎস্য প্রতিনিধিবৃন্দ।