পাবনায় অপহরণ করে হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ঝিনাইদহ জেলার শৈলকোপা উপজেলার লঘু নন্দনপুর গ্রামের নুরু জোয়ার্দারের ছেলে সবুজ ওরফে দাদা ভাই ওরফে বকুল, কুষ্টিয়া জেলার খোকশা থানার বনগ্রাম পূর্বপাড়ার মোবারক হোসেনের ছেলে আবুল কালাম, নিহাল বিশ্বাসের ছেলে আজাদ বিশ্বাস এবং একই এলাকার খলিল শেখ। রায় ঘোষণার সময় আসামী আজাদ ও আবুল কালাম উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাবনার বেড়া উপজেলার রামনারায়পুরের রশিদ সিকদারের বাড়িতে দিনমজুরের কাজে এসে সম্পর্ক তৈরি করেন ঝিনাইদহ জেলার শৈলকোপা উপজেলার লঘু নন্দনপুর গ্রামের নুরু জোয়ার্দারের ছেলে সবুজ ওরফে দাদা ভাই ওরফে বকুল। সম্পর্কের এক পর্যায়ে ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই রশিদকে বিদেশে নেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় সবুজ। পরের দিন রশিদের বাড়ির লোকজন তার খোঁজ নিলে সবুজ তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। এবিষয়ে বেড়া থানায় একটি অভিযোগ দেন রশিদের শ্যালক বাহের মন্ডল। অভিযোগের সূত্রে ধরে পুলিশ সবুজকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করেন যে- মুক্তিপণের টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে হত্যা করে লাশ পদ্মানদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে। তবে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে না পারায় আসামিদের বিরুদ্ধে শুধু অপহরণের মামলা দায়ের করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ৬ আসামীর মধ্যে রায় ঘোষণার আগেই ২ জন মারা গেছেন। এ মামলায় ১১ জনের স্বাক্ষী শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।
আদালতে আসামিদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান ও মকিবুল আলম বাবলা এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক বলেন, যেহেতু লাশ উদ্ধার হয়নি এজন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অপহরণ মামলায় বিচার হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিয়মান হয়েছে।
তবে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আসামিদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান। তিনি বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে আমার মক্কেল ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।’