নারায়ণগঞ্জে যুবদল নেতাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:৩২ | অনলাইন সংস্করণ

  নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে যুবদল নেতা মাহাবুব আলমকে (৩০) মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে, কুপিয়ে ও চোখ তুলে হত্যা করা হয়েছে। তাকে বাঁচাতে তার বাবা-মা-ভাই ও চাচার অনুনয়-বিনয় ও প্রাণ ভিক্ষার আঁকুতিতে কর্ণপাত করেনি ঘাতকরা। স্বজনদের সামনেই চলে মাহাবুবের উপর ধারাবাহিক পাশবিক নির্যাতন। 

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলা দুপ্তারা ইউনিয়নের সিংরাটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের কারণে অজ্ঞান হয়ে পড়লে ঘাতকেরা নির্যাতন থামালে তার স্বজনরা তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহত মাহাবুব আলম সিংরাটি এলাকার হানিফ মিয়ার ছেলে এবং দুপ্তারা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক।

নিহত মাহাবুবের চাচা মজিবর রহমান বলেন, একই গ্রামের হাশমত মিয়ার কাছে মাহাবুব তার একটি জমি বিক্রির জন্য ৩ লাখ টাকা বায়না নেয়। কিন্তু কিছুদিন যাবৎ হাশমত সেই জমি নেবে না জানিয়ে বায়নার টাকা ফেরৎ চায়। মাহাবুব টাকা ফেরতের জন্য সময় চায়। এনিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরী 
হয়।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মাহাবুব উপজেলার কালিবাড়ি এলাকায় গেলে সেখানে হাশমতের লোকজন প্রথমে মাহাবুবকে মারধর করে। এরপর অপহরণ করে একটি সিএনজিতে করে হাশমতের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হাশমত, তার ভাই কিসমত ও কামালসহ পরিবারের লোকজন পর্যায়ক্রমে তাকে মারধর করতে থাকে।

মজিবর আরও বলেন, খবর পেয়ে মাহাবুবের বাবা হানিফ মিয়া, মা তাহেরা বেগম, দুই ভাই মহিবুর ও হাবিবুর এবং আমি হাশমতের বাড়িতে যাই। 
 সেখানে গিয়ে দেখি মাহাবুবকে তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করছে। তারা লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে তাকে পেটাচ্ছে। ওই সময় আমরা টাকা পরিশোধ করে দেবো জানিয়ে মাহাবুবের প্রাণ ভিক্ষা চাই। কিন্তু আমাদের অনুনয় বিনয়ে তাদের মন একটুও গলেনি। উল্টো আমাদের সামনেই মাহাবুবের একটি চোখ উঠিয়ে ফেলা হয়। হাতুড়ি দিয়ে পর্যায়ক্রমে তার মাথায় আঘাত করে মাথার খুলি ফাটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। ওই দৃশ্য সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে মাহাবুব জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা আমাদের বলে এবার নিয়া যা। আমরা দ্রুত তাকে নিয়ে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে সেখান থেকে আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। আমরা জেনারেল হাসপাতালে এলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

মাহাবুবের বাবা হানিফ মিয়া ও মা তাহেরা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ওরা প্রভাবশালী। তাই আমাদের সামনেই পোলাডারে পিটাইয়া মাইরা ফালাইলো। আমরা এর বিচার চাই।

আড়াইহাজার থানার ওসি এমদাদুল হক তৈয়ব বলেন, এ ঘটনায় কিসমত ও কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।