গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য

সিরাজগঞ্জের রহিমপুর ঈদগাহ মাঠে দাড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী বটগাছ 

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ২০:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ

  এস,এম তফিজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ

গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় ‘বটবৃক্ষের ছায়া যেমন রে.., মোর বন্ধুর মায়া তেমন রে’.. এ লোকসংগীত আজও মনে করে দেয় গ্রামীণ ঐতিহ্য বটবৃক্ষের কথা। সময়ের বিবর্তনে বট গাছের ঐতিহ্য প্রায় হারিয়ে গেছে। তবে এখনও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ইছামতি নদীর অদূরে রহিমপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠে দাড়িয়ে আছে শতবর্ষী পুরানো বটগাছ। এ বট গাছের পাশেই ওই গ্রামের পূর্বপুরুষদের সমাধি রয়েছে। এক সময় বাড়ির সামনে, জমির কাছে ও বিভিন্ন স্থানে দেখা যেত অনেক বটগাছ। 

বটবৃক্ষের নিচে গ্রামগঞ্জের মেলাও বসত। গ্রাম বাংলায় অনেক ক্ষেত্রে ঠিকানা নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন স্থানকে ‘বটতলা’ বলা হতো। এমনকি পথ-ঘাটে, নদীর পাড়ে, জনবিরল স্থানে ডাল-পাতায় ভরা বটগাছ ছিল পথিকের বিশ্রামের জায়গা। বিশেষ করে কৃষকেরা মাঠের কাজ শেষে বিশ্রাম নিতো বট গাছের নিচে। এ ছায়া বটগাছ মানুষ, পাখি, কীটপতঙ্গের অকৃত্রিম বন্ধু। এ বন্ধু বট গাছ এখন তেমন গ্রামাঞ্চলে চোখে পড়ে না। পুরোনো অনেক বটগাছ চোখে পড়লেও নানা অজুহাতে কেটে ফেলা হচ্ছে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেও এ বটগাছ কাটা বন্ধও হয় না। 

বিশিষ্টজনেরা বলছেন, জীবন-জীবিকার তাগিদে ছুটতে গিয়ে মানুষ তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ভুলে যাচ্ছে। আর এ বটের ছায়া তেমন মিলছে না এ গ্রামঞ্চলে। 

তবে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের মতে, যেকোন এলাকায় একটি বটগাছ কাটার সাথে সাথে ৩ শতাধিক প্রজাতির আবাস নষ্ট হয়। তুলনামূলকভাবে এ গাছে শিতল পাতা বেশি। বসন্ত ও শরৎকালে এ গাছে নতুন পাতা গজায় এবং কচি পাতার রং সবুজ ঘেরা চকচকে। এ বট গাছের মঞ্জরির গর্ভে অনেক ছোট এবং গোলাকার ফুল লুকানো থাকে। এক লিঙ্গিক ফুল পরাগায়ণের জন্য পতঙ্গের ওপর নির্ভরশীল। এ শিতল বট গাছের ফল পাকে গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীত মৌসুমে। এ বটগাছ ঘিরে গ্রামঞ্চলে প্রবাদও রয়েছে আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা স্কুলে যাই। ফেরার পথে ওই বটগাছের নিচে কিছুক্ষন সময় কাটাই। 

এদিকে ওই গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা বলছেন, আনন্দঘন পরিবেশে প্রতি বছর ইদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা উপলক্ষে এ ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। উষ্ণ আবহাওয়ায় এ ছায়াবৃক্ষ অনেক উপকারে আসে বলে তারা উল্লেখ করেন।