ফেনীর সোনাগাজীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে বীর মুক্তিযোদ্ধা সফি উল্যাহ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছিলেন জামশেদ আলম (৪২)। তবে সেই সাজা থেকে বাঁচতে ১৯ বছর ধরে তিনি পালিয়ে ছিলেন। এরপরও তাঁর শেষ রক্ষা হয়নি। অবশেষে তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ধরা পড়তে হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ভোররাতে ঢাকার আদাবর এলাকার এক বাড়ি থেকে জামশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। জামশেদ আলম উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চর কৃষ্ণজয় এলাকার ফয়েজ আহাম্মদের ছেলে।
মামলা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে উপজেলার চর কৃষ্ণজয় এলাকায় জামশেদ আলমসহ ১০ থেকে ১২ জন পূর্ব শত্রুতার জেরে সফি উল্যাহকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এরপর সফি উল্যাহকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সফি উল্যাহর পরিবারের পক্ষ থেকে জামশেদ আলমসহ ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। পরে ওই মামলায় জামশেদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ কারাগারে পাঠায়। ছয় মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে জামশেদ গোপনে দুবাইয়ে পালিয়ে যান। এরপর তিনি আর আদালতে হাজির হননি। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত জামশেদসহ সব আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ইতিমধ্যে দুজন আসামি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকলেও অন্যরা পলাতক।
সোনাগাজী থানার উপপরিদর্শক মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ফেনীর আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাওয়ার পর পুলিশ আসামিদের খোঁজে মাঠে নামে। একই সঙ্গে র্যাব সদস্যরাও তাঁদের গ্রেপ্তার করতে অনুসন্ধান চালান। কিন্তু আসামিরা বিদেশে থাকায় তাঁদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে দেড় মাস আগে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামশেদ আলম দেশে ফিরে আসেন। কিন্তু গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বিভিন্ন আত্মীয়র বাড়িতে অবস্থান করতেন। কয়েক দিন আগে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা তাঁকে ধরতে ছদ্মবেশে তাঁর গ্রামের বাড়ি এবং ঢাকার সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানে গিয়ে খোঁজ খবর নেন।
পরে এক ব্যক্তির মাধ্যমে তাঁর মুঠোফোন নম্বর ও ছবি সংগ্রহ করা হয়। সেই নম্বরের সূত্র ধরে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা ভোরে রাজধানীর আদাবর এলাকার একটি বাসায় যৌথ অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. খালেদ হোসেন বলেন, জামশেদ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে ফেনীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।