৪৭ লাখ টাকার সুপারিসহ ট্রাক ডাকাতির ৭ মাস পর ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পাশাপাশি ডাকাতিতে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার জব্দ এবং লুন্ঠিত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা এতে জড়িত থাকার বিষয়ে দোষ স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ জেলা পিবিআই, পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন- নারায়নগঞ্জের পাইনাদি নতুন মহল্লার মোঃ শুভ শেখ, মোঃ বাপ্পি, মোঃ মামুন ও মোঃ রিগান খান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই (নিঃ) মোহাম্মদ বিল্লাল মিয়া জানান, নেত্রকোণা জেলার দূর্গাপুর থানা এলাকার ব্যবসায়ী অনুকুল পাল ভোলা জেলার বোরহান থানা এলাকার ব্যবসায়ী মোঃ মনির এর নিকট হতে সাতচল্লিশ লাখ দশ হাজার টাকায় ৩০১ বস্তা (১৫ টন) টাটা সুপারি ক্রয় করেন। ব্যবসায়ী মনির গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর রাত ৮ টার সময় তার বিক্রিত সুপারিগুলো কামালের “মেসার্স জুলেখা ট্রান্সপোর্ট” এর মাধ্যমে খুলনা মেট্রো ট-১১-০৮১০ অশোক লিল্যান্ড ট্রাকে করে দূর্গাপুরের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন। ট্রাকটির চালক ছিলেন বাবুল। এরপর ২৩ সেপ্টেম্বর ভোর ৪ টার সময় ট্রাক চালক বাবুল ট্রান্সপোর্ট মালিক কামালকে অপরিচিত একটি নম্বর দিয়ে ফোন দিয়ে জানায় যে, রাত ১ টার সময় সে সুপারি ভর্তি ট্রাকটি নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানাধীন হারুয়া বাজার এলাকায় পৌঁছামাত্র একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকার পিছন থেকে এসে ট্রাকটিকে ব্যারিকেড দেয়। ট্রাকটি থামানোর সাথে সাথে প্রাইভেটকার থেকে ৪ জন ডাকাত ট্রাকে উঠে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রশি দিয়ে ট্রাক চালকের হাত-পা বাঁধে এবং গামছা দিয়ে মুখ চোখ বেঁধে ফেলে। ডাকাতরা সম্পূর্ণ ট্রাকের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর ট্রাক ঘুরিয়ে পুনঃরায় কিশোরগঞ্জের দিকে রওনা করে। অন্য ডাকাতরা প্রাইভেটকার নিয়ে ট্রাকের পিছনে আসতে থাকে। রাত ৩ টা ৩০ মিনিটের সময় ডাকাত দল ভৈরব হাজী হাসমত আলী কলেজের কাছে রাস্তায় ড্রাইভার বাবুলকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে দিয়ে ট্রাক নিয়ে চলে যায়।
উক্ত ঘটনায় মেসার্স জুলেখা ট্রান্সপোর্ট এর মালিক কামাল হোসেন বাদী হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা ডাকাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে ঈশ্বরগঞ্জ থানার মামলা নং-২৫ তাং-২৪/০৯/২০২২ খ্রিঃ ধারা-৩৯৫/৩৯৭ দঃ বিঃ রুজু হয়। মামলা রুজুর গত ২৪/০৯/২২ খ্রিঃ হতে ২৬/১০/০৩/২২ খ্রিঃ এবং ডিবি ২৮/১০/২২ হতে ০৫/০৩/২৩ খ্রিঃ পর্যন্ত মামলাটি তদন্ত করেন। পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে গত ০৫/০৩/২৩ খ্রিঃ পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলা মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে।
ময়মনসিংহ জেলা পিবিআই, পুলিশ সুপার মোঃ রকিবুল আক্তার জানান, পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার সকল অফিসার ও ফোর্সের অক্লান্ত প্রচেষ্টায়, পিবিআই নারায়নগঞ্জ জেলা ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের সহযোগিতায় মাত্র এক মাসের মধ্যে চাঞ্চল্যকর স্কুলেস এই ডাকাতি মামলার রহস্য উদঘাটন ও ডাকাত দলের সক্রিয় ৪ জন সদস্যকে গ্রেফতার, ডাকাতিতে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার জব্দ এবং লুন্ঠিত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা সম্ভব হয়।