ঢাকা ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুরে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা 

রংপুরে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা 

রংপুর নগরীর ছোট-বড় চার শতাধিক কাপড়ের দোকানে ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে। নগরীর ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভীড় চোখে পরার মতো। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বিপণীবিতানে ক্রেতাদের আনাগোনা ততই বাড়ছে। অবশ্য গতবারের চেয়ে এবার বেশি দামেই ঈদের পোশাক কিনতে হবে ক্রেতাদের।

নগরীর অভিজাত শো-রুমের মালিকরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার পোশাকের দাম ২০-৩০ শতাংশ বেড়েছে।

মহানগর দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলছেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরে নতুন পোশাকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। বিশেষ করে শবে বরাতের পর থেকে পাইকারি বাজার জমে ওঠে। খুচরা পর্যায়ে রোজার শুরু থেকে বিক্রি বাড়ে, আর শেষ দিকে ব্যবসা জমজমাট হয়ে ওঠে। কিন্তু এবারের বেচাকেনার ধারাবাহিকতায় তার চিত্র উল্টো। রমজানের শেষের দিকে বেচা-কেনা জমে ওঠার আশা তাদের।

রংপুর নগরীর বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা সমাগম কিছুটা থাকলেও দামের কষাকষি চলছে। ছুটছেন এক মল থেকে অন্য মলে। এভাবেই ঘুরছেন ক্রেতারা, আবার অনেকে কিনছেনও নিজের বাজেট ঠিক রেখে। কেউবা আবার সবশেষ দৃষ্টি দিচ্ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।

নগরীর সারা শপিংমল, পান্জাবিওয়ালা, কারুপন্য, রয়েলিটি মেগামল, জাহাজ কোম্পানি শপিংমলসহ বেশ কয়েকটি শপিং মল ঘুরে দেখা গেছে, আসন্ন ঈদুল ফিতরকে ঘিরে চোখে পড়ার মতো ক্রেতা সমাগম নেই।

নগরীর জাহাজ কোম্পানি সংলগ্ন সারা শপিং সেন্টারে কথা হয় পরিবারের সদস্যদের পোশাক কিনতে আসা বেসরকারি একটি কোম্পানিতে চাকরিরত মোজাহার আলীর সাথে।

মোজাহার বলেন, আমার পরিবারের পুরুষ সদস্যদের জন্য ৬টি পাঞ্জাবি কিনতে হবে। পছন্দের পাঞ্জাবি দেখছি কিন্তু গায়ে লাগানো একদরের মূল্য সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। তারপরও সময় অভাবে যেহেতু আজ এসেছি দেখে শুনে কিনতে হবে বিধায় ঘুরে ঘুরে দেখছি।

বেচাকেনা আর দামের বিষয়ে সারা শপিং সেন্টারের ম্যানেজার সবুজ আলী বলেন, রমজানের শুরু থেকে আমাদের বেচাকেনা একদমই হালকা ছিলো। তবে এখন একটু বেড়েছে।

দামের বিষয়ে সবুজ মিয়া বলেন, আমাদের এখানে দাম বেশি নেই, কোয়ালিটি অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ক্রেতাদের সাধ্যের মধ্যেই আছে। দামের বিষয়ে বিশ্বস্ততার জন্যেই মানুষ সারা শপিং সেন্টারে নির্দ্বিধায় পোশাক কিনতে আসেন।

জাহাজ কোম্পানি শপিং মলে পোশাক কিনতে আসেন কলেজে শিক্ষার্থী আজাদ, শিমুল, শাহীন এবং বাবু। কথা হলে বাবু বলেন, গতবারের ন্যায় এবারও ঈদের মার্কেট করার জন্য পরিবার থেকে আমাদের ৩ হাজার টাকা দিয়েছে। প্যান্ট-শার্ট আর পাঞ্জাবি কিনতে হবে। জুতা কিছুদিন আগেই কিনেছি। কয়েকটি দোকান ঘুরলাম বন্ধুদের সাথে কিন্তু বাজেট অনুযায়ী কিনতে পারছিনা।

শিমুল, শাহিন আর বাবুর মতো কিছু ক্রেতারা শপিংমলগুলোতে পোশাক দেখলেও কেনার হার অনেক কম দেখা গেছে। অনেক ক্রেতা বলছেন, দাম বেশি আর সময় এখনও অনেক আছে, তাই দেখে শুনে দর করে কিনবো। প্রয়োজনে দশ দোকান ঘুরবো। আর কিছু ক্রেতা বলেছেন, বড় শপিংমলগুলোতে দাম অনেক বেশি।

অপরদিকে, নগরীর ফুটপাতের দোকানগুলো জমে উঠেছে বেশ। ছালেক মার্কেট, শাহ জালাম মার্কেট, বেতপট্টি হকার্স মার্কেট, হনুমানতলা, ইসপাহানি মার্কেটে নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের কেনা কাটা বেশী করছে। তবে যারা পোশাক কিনছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগই চাকরিজীবী।

রংপুর মহানগর দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন বলেন, রংপুর মহানগরে ছোট বড় প্রায় চার শতাধিক কাপড়ের দোকান আছে। রমজানের শুরু থেকে এসব দোকানে বেচাকেনার হার খুবই কম থাকলেও মাসের প্রথম সপ্তাহে চাকরিজীবীদের বেতন হওয়ায় এখন একটু জমতে শুরু করছে। সেটিও অন্যবারের তুলনায় অনেক কম। তবে দিন যতো ঈদের দিকে এগোবে ততই বেচা-কেনা বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি।

রংপুর চেম্বার অব কমাসের প্রেসিডেন্ট মোস্তফা সোহরাব চৌধূরী বাবু বলেন, গতবারের তুলনায় তৈরি কাপড়ের দাম বেশী। এ কারণে ক্রেতার সমাগম তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকারী কর্মকর্তারা বোনাস পেলে কেনা কাটায় ছন্দ আসবে। তিনি আরও বলেন, ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন আগে দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা যাবে।

ঈদ,কেনাকাটা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত