শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন ও কর্মচারীদের ৪ মাসের বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও আইনগত পাওনা পরিশোধের দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকার মুনলাক্স এ্যাপারেলসের শ্রমিক কর্মচারীরা।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে তাঁরা এম এস টাওয়ারের মুনলাক্স এ্যাপারেলসের সামনে সমবেত হয়ে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
অবস্থান কর্মসূচির সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুনলাক্সের শ্রমিক মোঃ সাকিব, সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক এম এ শাহীন, যুগ্ন-আহবায়ক ইকবাল হোসেন, মুনলাক্সের শ্রমিক মিলন, জিসান ও রাণী প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচির সমাবেশে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, মুনলাক্সের মালিক দেশে প্রচলিত শ্রম আইন লঙ্ঘণ করে ঈদ মুহুর্তে বেআইনিভাবে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক কর্মচারীর জীবন হুমকির মুখে ফেলেছে। শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন ও কর্মচারীদের ৪ মাসের বকেয়া বেতনসহ ঈদ বোনাস নিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করেছে। শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ না করেই মালিক কারখানাটি গত পহেলা মার্চ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু শ্রমিক কর্মচারীদের আইনগত পাওনাদী পরিশোধের কোন সিদ্ধান্ত দেয় নাই। কলকারখানা অধিদপ্তরের ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে পূর্বের লিখিত চুক্তি অনুযায়ী গত ৬ এপ্রিল শ্রমিক কর্মচারীদের ফেব্রুয়ারী মাসের বেতন দেয়ার কথা থাকলেও মালিক দেয় নাই। শ্রমিকদের আন্দোলনের চাপে গত ৯ এপ্রিল তাঁদের বেতন দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু কর্মচারীদের বেতন এক টাকাও দেয় নাই।
শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন ও কর্মচারীদের ৪ মাসের বকেয়া বেতন এবং ঈদ বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শ্রমিক কর্মচারীদের আইনি পাওনা পরিশোধে মালিক পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত দেয়া হচ্ছে না। সামনে ঈদ শ্রমিক-কর্মচারিরা দুশ্চিন্তায় দিশেহারা। মুদি দোকানের বাকীর টাকা, ঘর ভাড়ার টাকার জন্য দোকান্দার ও বাড়িওয়ালা চাপ দিচ্ছে। তাঁদের পাওনা পরিশোধের জন্য অপমান-অপদস্থ হতে হচ্ছে । ঈদের আগে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস না পেলে তাঁদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের দিনে না খেয়ে থাকতে হবে। পাওনাদারদের অপমানের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার কোন উপায় থাকবে না। ঈদের আগে মুনলাক্সের শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ নিতে হবে। নতুবা শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ-বিক্ষুব্ধ হয়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী সোমবার (১৭ এপ্রিল) এর মধ্যে মুনলাক্সের শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-বোনাস পরিশোধ করা না হলে ও আইনগত পাওনা পরিশোধের সিদ্ধান্ত না দিলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলার মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে। শিল্পের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে হলে মুনলাক্স এ্যাপারেলস ও এস এস ক্রিয়েটিভ স্টিজ শ্রমিকদের ৩ মাসের বকেয়া বেতন'সহ অপরাপর সকল কারখানা শ্রমিকদের ঈদের আগে বেতন-বোনাস প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ'সহ সরকারের প্রতি আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।