পর্যটকদের জন্য পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর শহর নিশ্চিত করতে ও সাগরের দূষণরোধে হোটেল-মোটেল জোনে দ্রুততম সময়ে এসটিপি স্থাপন অপরিহার্য বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) এর চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার (অব.)।
তিনি বলেন, মানবসৃষ্ট আবর্জনা ও সুয়্যারেজ বর্জ্য নির্বিচারে সমুদ্রে নিক্ষেপ করে বর্তমানের যেভাবে সমুদ্র দূষণ করা হচ্ছে তাতে করে আগামী এক দশকের মধ্যে কক্সবাজার উপকূলে ‘ডেড জোন’ তৈরি হওয়া আশংকা রয়েছে, যার ফলে ব্লু-ইকোনোমি মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
গতকাল বুধবার কক্সবাজার শহরে সুয়্যারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি)/ ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপন বিষয়ে হোটেল-মোটেল-গেষ্ট হাউজ মালিকগণ ও হ্যাচারি মালিকগণের সাথে কউক আয়োজিত মতবিনিময় সময় তিনি একথা জানান। তিনি আরও বলেন, সমন্বিত এসটিপি স্থাপনের বিষয়ে সরকারের নীতিগত সহযোগিতার জন্য বিষয়টি ইতিমধ্যেই গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। আগামীতে এই বিষয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে উপযুক্ত প্রযুক্তি বাছাই করে হোটেল-মোটেল জোনের জন্য একটি সমন্বিত এসটিপি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। তার পাশাপাশি হোটেল-মোটেল মালিকগণকে স্ব-উদ্যোগে নিজ নিজ হোটেলে অথবা ক্লাষ্টারিং এর মাধ্যমে এসটিপি স্থাপন করার অনুরোধ জানান।
কউক ভবনের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত এই সভায় কক্সবাজারের পরিবেশ দূষণচিত্র ও এসটিপি নিয়ে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন কউকের উপ-নগর পরিকল্পনাবিদ জনাব তানভীর হাসান রেজাউল। তিনি জানান কউকের কর্তৃক ১৩৪টি হোটেল-মোটেল/গেস্ট হাউজ/কটেজকে এসটিপি সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের জন্য পত্র প্রেরণ করা হয়েছিল। তন্মধ্যে মাত্র ৬ টি হোটেল এসটিপি স্থাপন করা হয়েছে জানিয়েছে এবং ৩৯টি হোটেল-মোটেল/গেস্ট হাউজ/কটেজ ৩ চেম্বারবিশিষ্ট সেপটিক ট্যাংক রয়েছে বলে জানিয়েছে। বাকি ৮৯টি পত্রের বিপরীতে কোন জবাব পাওয়া যায়নি। পরে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন কউকের সদস্য (প্রকৌশল) লে: কর্নেল মো. খিজির খান পি ইঞ্জ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান, কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম শিকদার, সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ, মুকিম খান, শ্রিম্প হ্যাচারি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নজিবুল ইসলাম প্রমুখ।
আলোচনায় বক্তারা বলেন কক্সবাজারের ভবিষ্যৎ পর্যটনের স্বার্থেই জরুরি ভিত্তিতে এসটিপি স্থাপন করা প্রয়োজন। সরকারি ও বেসরকারি সকল অংশীদারগণের সমন্বিত অংশগ্রহণের মাধ্যমেই কেবল এই উদ্যোগ সফল করা সম্ভব। এ সময় কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও হ্যাচারির মালিকগণ, পৌরসভাসহ বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।