যশোরের শার্শা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেবার মান
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৭:১৫ | অনলাইন সংস্করণ
বেনাপোল প্রতিনিধি
যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসার মান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকার চিকিৎসা খাতকে গুরুত্ব দেওয়ায় এর সুফল পাচ্ছে শার্শা উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি ইতিমধ্যেই স্থানীয় এলাকাবাসীর আস্থার প্রতীক হিসাবে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকার হাসপালটিতে উন্নয়নের কাজ করছে। এছাড়াও বিভিন্ন পদে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করছে। সরেজমিনে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০০-৪০০ রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। কাঙ্গিত চিকিৎসা পেয়ে এলাকার সাধারণ জনগণ খুবই খুশি।
গত ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে যখন প্রথম করোনা শনাক্ত হয়, তখন থেকে নড়েচড়ে বসে দেশের সরকার। তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বেনাপোল স্থলবন্দরে মেডিকেল টিম নিয়োজিত করেন। হেলথ স্কিনিং, মূমূর্ষ রোগীদের চিকিৎসা সেবা, আক্রান্ত যাত্রীদের আইসোলেশন, ১৪ দিনের কোয়ারেনটাইন বাস্তবায়ন, কোয়ারেনটাইনকৃত যাত্রীদের চিকিৎসা সেবা, করোনা পরীক্ষা পূর্বক প্রশাসনের সহযোগীতায় তাদের জেলা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালসহ বিভাগীয় বিভিন্ন হাসপাতালে রেফার করার দায়িত্ব যিনি পালন করেন তিনি হলেন শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. ইউসুফ আলী। উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উপজেলায় একটি মডেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তৈরীতে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি।
জরায়ূমূখে ক্যান্সার প্রতিরোধ কার্যক্রম অবদানের জন্য ২০২২ সালে বিভাগীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। শার্শা উপজেলাসহ বেনাপোল বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারী, কাস্টমস, বিজিবি, পুলিশ, সাংবাদিক, আনসার সদস্য, খালাসি এবং শ্রমিক সকলের করোনা পরীক্ষা করা, করোনা টিকা প্রদানে অসামান্য দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছে এই হাসপাতালটি। হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে আরও গতিশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বহির্বিভাগের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে মডেল এন সি ডি কর্নার প্রতিষ্ঠা, ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন রোগীদের জন্য বিনামূল্যে ঔষধ সরবরাহসহ আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জরুরী বিভাগে ২৪ ঘন্টা মেডিকেল অফিসারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। একটি পূর্ণাঙ্গ ডায়াগনস্টিক সেবা চালু করেছে। ডাক্তার ইউসুফ আলী শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর ক্যাম্পাসে একটি নান্দনিক দৃশ্য ফুটে উঠেছে। হাসপাতালের রান্নাঘরের পরিবেশও ভাল এবং সেখানে কাঠের পরিবর্তে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে।
করোনাকালীন সময় থেকে করোনা রোগিদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে জাইকার অর্থায়নে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাসপাতাল ক্যাম্পাসটি পূর্বে জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিলো। বর্তমানে হাসপাতালের আগের সেই চিরচেনা পরিবেশ এখন আর নেই।বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ইউসুফ আলী আগের সেই নোংরা পরিবেশেকে একেবারেই পরিবর্তন করে ফেলেছেন। ক্যাম্পাসে এখন ফুলের বাগান, ভেষজ বাগান এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক হাসাপাতালের পতিত জমিতে সবজি বাগান করেছেন।
চিকিৎসা নিতে আসা আসাদুজ্জামান বলেন, যশোর জেলার শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি বর্তমানে দেশের একটি মডেল হাসপাতাল। স্বাস্থ্য জনিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গত দুই বছর আমি এখানে চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ নিচ্ছি। এখানে চিকিৎসা নিতে এসে এখন কেউ ফিরে যায়না। মেডিকেল অফিসাররা অতি যত্নসহকারে রোগীদের কথা শোনেন এবং চিকিৎসা পত্র দেন।
এছাড়া ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের কর্মতৎপরতায় মুখর থাকে যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তারাও খুশি এখান থেকে চিকিৎসা সেবা পেয়ে।
এদিকে, হাসপাতালে সার্জিক্যাল বিভাগ, মেডিসিন বিভাগ, গাইনি বিভাগ ও অ্যানেস্থেশিয়া বিভাগের কনসালটেন্ট পদে আরো ডাক্তার নিয়োগ দেবেন বলে জানিয়েছে ডাক্তার ইউসুফ আলী।
তিনি আরও জানান, জাতীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দীন মহোদয়ের নিকট হতে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি হাসপাতালে গাড়ি পার্কিং ও শেড নির্মাণ করেছেন। করোনাকালীন সময়ে হাসপাতালের জন্য একটি নতুন এম্বুলেন্স প্রাপ্তিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন।