ট্রলারে ১০ মরদেহ: আরও ৩ জন গ্রেপ্তার
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৯:১৫ | অনলাইন সংস্করণ
কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র্যাব। এ নিয়ে এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হল। গ্রেপ্তারের মধ্যে আদালতের আদেশে ২ আসামি ৫ দিন করে রিমান্ডে রয়েছে। একই সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমের খাল থেকে উদ্ধার হওয়া মানুষের কংকালটি নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে একজনের বলে ধারণা করছেন পুলিশ।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বুধবার রাতে প্রযুক্তিগত সহায়তায় ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চকরিয়া উপজেলার বদরখালী এলাকা থেকে গিয়াস উদ্দিন মুনির (৩২) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মুনির বদরখালী এলাকায় মো. নুর নবীর ছেলে। তাকে ইতিমধ্যে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ড আবেদনের শুনানী হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনায় সন্দেহজনক ২ জনকে র্যাব আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে জানিয়ে এসপি বলেন, বাঁশখালীর কুদুকখালী থেকে আটক করে এ দুই জনকে সোপর্দ করা হয়েছে। এদেরও গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এরা হলেন, বাঁশখালীর কুদুকখালী এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে ফজল কাদের মাঝি (৩০) ও শামসুল আলমের ছেলে আবু তৈয়ব মাঝি (৩২)।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমের খাল থেকে উদ্ধার হওয়া মানুষের কংকাল উদ্ধার করা হয়। কংকালটি এ ঘটনায় নিখোঁজ জেলেদের একজনের বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১০ জনের পাশাপাশি এই কংকালের ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ইতোমধ্যে ১০ মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে পুলিশ সুপার বলেন, নিহতদের কারও শরীরে গুলি বা অন্য কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ফলে এদের হাত-পা বেঁধে হিমঘরে আটকে হত্যার বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার।
তিনি জানিয়েছেন, আদালতের আদেশে মামলার এজাহারভূক্ত ১ নম্বর আসামি মাতারবাড়ির এলাকার ট্রলার মালিক বাইট্টা কামাল ও ৪ নম্বর আসামি ট্রলার মাঝি করিম সিকদার রিমান্ডে রয়েছে। এদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। এর সূত্র ধরে চলছে তদন্ত।
পুলিশ এ ঘটনায় কয়েকটি উৎসকে সামনে রেখে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়েছে মাহফুজুল জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই হত্যাকান্ডের মুল কারণ জানা সম্ভব হতে পারে।
রবিবার (২৩ এপ্রিল) গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার সাগরে ভাসমান থাকা ট্রলারটি নাজিরারটেক উপক‚লে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের হিমঘরে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ট্রলারটির মালিক মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের হরিয়ারছড়া এলাকার ছনখোলা পাড়ার মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে সামশুল আলম প্রকাশ সামশু মাঝি। যার মরদেহ গ্রহণ করেছেন তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম। ইতিমধ্যে দায়ের হওয়া মামলার বাদিও তিনি। রোকেয়া বেগমও স্বীকার করেছেন ট্রলারটি মালিক তার স্বামী।
ইতোমধ্যে উদ্ধার হওয়া ৬ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করলেও মর্গে রয়ে গেছে ৪ জনের মরদেহ ও কংকালটি। ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এ ৫ জনের পরিচয়।