সুস্থ জীবনে ফিরতে চায় প্রতিবন্ধী সুজন
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ১৯:১৬ | অনলাইন সংস্করণ
দেওয়ান আবুল বাশার, মানিকগঞ্জ
বদ্ধ খাঁচার পাখিও চায় নীল আকাশে উড়তে। বদ্ধ পুকুরের মাছও চায় খোলা নদীতে সাঁতার কাটতে। ঠিক তেমনি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের চরবাইজুরী গ্রামের মৃত খলিলের ছেলে সুজনও চায় সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে।
জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী সুজনের মন চায় প্রাণ খুলে হাসতে, উন্মুক্ত মাঠে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটতে। উপভোগ করতে চায় জীবনটাকে। কাজের মাঝে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চায়। কত দেশ, নদনদী, পাহাড় -পর্বত, সৌন্দর্যের ঢালি সাজিয়ে বসে আছে। মন বলে ছুটে যাই সেই প্রকৃতির কাছে। ঘরবন্দী জীবন আর ভালো লাগেনা। যে জীবনে প্রাণের স্পন্দন নেই, হাসি-আনন্দ নেই সেই রকম জীবন চায় না। ছুটে যেতে চায় পৃথিবীর দিকে, সমুদ্র-মেঘলা, নদী-পর্বতে, শোভিত এই বিপুলা পৃথিবীতে। আহা প্রতি মুহূর্তে যেনো হাতছানি দিয়ে ডাকছে। চাইলেই এখন এই মুহূর্তে অনেক কিছু করা সম্ভব না। বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে না দেখা একটি রোগ। প্রাণঘাতী রোগটি সুজনের স্বাভাবিক জীবনকে ঘায়েল করেছে। বদলে দিয়েছে তার জীবনধারা। আঁকাবাঁকা পথের মত হয়ে গেছে তার জীবন পথ। এমন ধূসর অবকাশ জীবন কেও চায় না।
সরেজমিনে সুজনের সাথে কথা বলে জানা যায় সোহাগ নামে আরেকটি ভাই ছিল তার। দুই তিন বছর আগে একই রোগে সে মারা গেছে। তার বাবাও বেঁচে নেই। অভাবের সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী তার মা। স্বামী সন্তানহারা সুফিয়ার শরীরটাও ভালো নেই। গরু বাছুর প্রতিপালন করে প্রতিবন্ধী ছেলেটিকে নিয়ে অস্বাভাবিক জীবন যাপন করছে সে। অনেক চেষ্টা করেও ভালো করতে পারেনি তার সন্তানকে । অভাবের কারণে ছেলের চিকিৎসা হয়নি।
সুজন সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আকুতি জানিয়ে বলেন, আপনারা আমার জন্য আল্লাহর কাছে একটু ফরিয়াদ করবেন। আল্লাহ যেন আমাকে সুস্থ করে দেন। আমি আর দশটা ছেলের মত চলাফেরা করব। আমার বাবা ও ভাই নেই। আহাজারি করে সুজন বলে আমি মরে গেলে আমার মায়ের পাশে দাঁড়ানোর মত আর কেউ থাকবে না। আমি ভালো হতে চাই।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুল লতিফ এর সাথে কথা হয়; তিনি জানান, সুজনের নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে যখন যা আসে আমরা পরিষদের পক্ষ থেকে তা দেওয়ার চেষ্টা করি। সমাজের বিত্তবানরা তার পাশে দাঁড়ালে হয়তো তার পরিবারটি স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারবে।