মানিকগঞ্জে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে নদীর পাড় ও ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মাটি ব্যবসায়িরা। রিতিমতো মাটি বিক্রির মহোৎসবে মেতেছে ভুমিদস্যু চক্র। ফলে একদিকে দিন দিন ফসলি জমি শেষ হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে নদীর পাড় কাটায় বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকা সহজে বন্যা কবলিত হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীরা। এছাড়াও এসব মাটি বহনে ছোট রাস্তা গুলোতে ভারী যানবাহন ব্যবহার করায় সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীন সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েও মিলছে না প্রতিকার।
বুধবার (৩ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা মিতরা ইউনিয়নের ধলেশ্বরী ব্রিজের নীচে নদীর পাড় ও পাড় সংলগ্ন ফসলি, একই ইউনিয়নের গোবিন্দপুরের চক ও পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পাড় কেটে নদীর আকৃতি এবং গতিপথ পারিবর্তন করা হয়েছে। ফলে স্থানীয় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে পুটাইল ইউনিয়নের গুরু সেওতা, নাগরা, ও চান্দরারও চকের ফসলি জমি থেকেও ভূমিদস্যুরা মাটি কেটে বিক্রি করছে। এছাড়াও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বায়রা খেয়াঘাট, ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বাঘিয়া ও আটিগ্রাম ইউনিয়নের ভগবানপুর এলাকাতেও ভূমি দস্যুরা তাণ্ডব চালাচ্ছে।
ইতোপূর্বে কোন কোন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করলেও ৭২ ঘন্টা পার হতে না হতেই তারা আবার ফিরে গেছে সাবেক রুপে।
এছাড়াও মাটি বোঝাই করে কাঁচা পাকা রাস্তায় চলছে একাধিক ভারী যানবাহন। এতে করে নতুন পুরাতন রাস্তা গুলো নিমিষেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। আবার সারা দিনে একটি রাস্তায় একাধিক গাড়ী একটানা চলার কারনে ব্যাপক ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে। তাতে গ্রামের ছোট বড় সবাইকেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অসুস্থ্য হয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে শিশুসহ বয়স্কদের। এদিকে পাঁকা রাস্তায় মাটি বোঝায় ট্রাক থেকে খসে পড়া মাটির উপরে একটু বৃষ্টি পড়লেই সেসব সড়কে স্লিপ কেটে ঘটতে পারে সড়ক দুর্ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উক্ত মাটি ব্যবসায়িরা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এসব এলাকায় ফসলি জমি সহ নদীর পাড় থেকে দিন রাত মাটি বাণিজ্য করে আসছে। ভূমিদস্যু চক্রটি এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বাঁধা দেওয়ার সাহস পায় না। সাহস করে কেউ প্রতিবাদ করলেই চাঁদাবাজির মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি শিকার হতে হয় তাদের।
স্থানীয়রা জানান, মাটি ব্যবসায়িরা ভূমি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নদীর পাড়, সমতল ভূমি এবং ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটাসহ বিভিন্নস্থানে বিক্রি করে আসছে।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, মাটি ব্যবসায়িদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। যারাই অবৈধভাবে মাটি বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।