রূপগঞ্জে স্টিল মিলে বিস্ফোরণ, প্রাণ হারালো ৪ শ্রমিক
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৩, ২০:১৩ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক, রূপগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আরআইসিএল নামক একটি রোলিং কারখানায় লোহার ভাট্টি বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে । এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল হকের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ওই কারখানায় পরিদর্শনে গিয়ে গ্যাস সংযোগ এবং বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। এসময় বিস্ফারনের সঠিক ঘটনা তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটিতে আহবায়ক করা হয় ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মুস্তাফিজুর রহমানকে, সদস্য সচিব করা হয় কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন অফিসার মোঃ রফিকুল ইসলামকে এবং সদস্য করা হয় নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ -২ এর প্রকৌশলী আলতাফ হোসেনকে।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফায়সাল আলম বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার তিন ঘন্টা পাড় হয়ে গেলেও ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসন ফায়ার সার্ভিস কে অবহিত করেননি। এছাড়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত এবং সরকারি সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে।
কারখানার কয়েকজন শ্রমিক জানান , গত ৩ মাস ধরে কারখানাটি চালু করা হয়েছে। কারখানাটিতে বর্তমানে ২০-২৫ জন শ্রমিক কাজ করছে। কারখানাটি গত ৩ মাস ধরে চালু হলেও কারখানার ভেতরে কোন প্রকার অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থার সামগ্রী রাখা হয়নি। কাজ করার জন্য শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি কোন প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী। শ্রমিকরা কারখানা মালিকপক্ষকে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ও ঝুকিপূর্ণ কাজের সুরক্ষা সামগ্রী প্রদান করার কথা বলে আসলেও মালিকপক্ষ তাদের কথায় কোন প্রকার কর্নপাত করেনি।
রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, এখন পর্যন্ত নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ কোন ধরনের লিখিত অভিযোগ দেননি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পক্ষ থেকে অভিযোগ না দিলে পুলিশ বাদী হয়ে এই ঘটনায় দোষীদের অভিযুক্ত করে মামলা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় রাহিমা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোম্পানি লিমিটেড( আরআইসিএল) নামের রোলিং মিলে লোহা গলানোর ভাট্রি বিস্ফোরণ ঘটে। ওই সময় ঘটনাস্থলেই মারা যান শংকর চন্দ্র সাহা (৩৫) একজন। দগ্ধ আরো ৬ জনকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনসটিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ইলিয়াস আলীর (৩৫)। এরপর শুক্রবার সকাল দশটার দিকে নিয়ন (২০) এবং দুপুর ১২টায় মৃত্যু হয় আলমগীরের (৩০)। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইব্রাহিমের শরীরের ২৮ শতাংশ, মো. জুয়েলের ৯৭ শতাংশ এবং গোলাম রাব্বির শরীরের ৯৯ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের অবস্থাও আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনসটিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এসএম আইয়ুব হোসেন।