ঢাকা ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আসন্ন জাতীয় বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দের আহবান 

আসন্ন জাতীয় বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দের আহবান 

আসন্ন জাতীয় বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দ করা না হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচী দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে রংপুর অঞ্চলের সংসদ সদস্যদের সংসদে কথা বলতে তিনি আহবান জানান।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে আর যদি আপনারা সংসদে কথা না বলেন তাহলে তিস্তা পারের নদী ভাঙ্গা জমি হারা, গৃহ হারা লাখ লাখ সাধারণ মানুষ আপনাদের লাল কার্ড দেখাবে। তিনি নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবী জানান। মেয়র বলেন, এই দাবী আদায়ে সকল রাজনৈতিক দল এক কাতারে এসেছে।

শনিবার (৬ মে) বিকেলে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ চত্তরে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের আয়োজনে এক গণসমাবেশে অনুষ্ঠানের উদ্ধোধক হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ থেকে আগামী ১ জুন তিস্তা অঞ্চলের ৫ জেলায় ৫ মিনিটের স্তব্ধ কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।

তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হাক্কানীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এমপি রাশেদ খান মেনন, সাবেক মন্ত্রী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি নাজমুল হক প্রধান, গেরিলা লিডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম কানু, রাজারহাট উপজেলা চেয়ারম্যান জাহীদ সরওয়ার্দী বাপ্পী প্রমুখ।

সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এমপি রাশেদ খান মেনন বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে, তিস্তা পাড়ের মানুষের বাড়ি-ঘর, জমি রক্ষা পাবে। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে। কিন্ত দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করার পরেও এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে না সরকার। কেন হচ্ছেনা তা কেউ বলতে পারছে না।

সাবেক মন্ত্রী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন, তিস্তা এই অঞ্চলের মানুষের আর্শিবাদ ছিলো। এখন তা অভিশাপে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই অঞ্চলে মঙ্গা দূর হয়েছে। আমরা চাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হউক। আসন্ন বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার বাদী জানান তিনি। সেই সাথে তিনি তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নেরও দাবী জানান।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, এই অঞ্চলকে দ্রুত দারিদ্রমুক্ত করতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। সমাবেশ থেকে আগামী ১ জুন তিস্তা অঞ্চলের ৫ জেলায় ৫ মিনিটের স্তব্ধ কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।

সমাবেশে ৬ দফা বাদী পেশ করা হয়। দাবীগুলো হচ্ছে- তিস্তা নদী সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ দ্রুত বাস্তুবায়ন। অভিন্ন নদী হিসেবে ভারতের সঙ্গে ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন, তিস্তা নদীতে সারা বছর পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে জলাধার নির্মাণ। তিস্তা নদীর শাখা-প্রশাখা ও উপ-শাখাগুলোর সঙ্গে নদীর পূর্বেকার সংযোগ স্থাপন ও নৌ চলাচল পুনরায় চালু। ভূমিদস্যুদের হাত থেকে অবৈধভাবে দখলকৃত তিস্তাসহ তিস্তার শাখা-প্রশাখা দখলমুক্ত করা। নদীর বুকে ও তীরে গড়ে ওঠা সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ। তিস্তা ভাঙন, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ। নদী ভাঙনের শিকার ভূমিহীন, গৃহহীন ও মৎস্যজীবীসহ নদী ভাঙনে উদ্বাস্তু মানুষের পুনর্বাসন। তিস্তা মহাপরিকল্পনায় তিস্তা নদী ও তিস্তা তীরবর্তী কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষায় কৃষক সমবায় এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলা। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ এবং প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তা পাড়ের মানুষদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা,বাস্তবায়ন,অর্থ বরাদ্দ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত