কাউখালীতে রেনু পোনা ও জাটকা নিধনের মহোৎসব

প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৩, ১৫:৩২ | অনলাইন সংস্করণ

  কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি

পিরোজপুরের কাউখালীতে মাছের অভয়াশ্রম খ্যাত খরস্রতা কালীগঙ্গা নদীর মোহনায় বাধা জাল দিয়ে রেনু পোনা ও ছোট মাছ ধরার মহোৎসব চলছে।

এক শ্রেনীর অসাধু জেলেরা রাতের পর রাত, দিনের পর দিন প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আতাতের মাধ্যমে ম্যানেজ করে বছরে কোটি কোটি টাকার রেনু পোনা ও জাটকা নিধন করে রাতারাতি ধনী হচ্ছে। সরকারি সব সুবিধা ভোগ করার পরেও তারা নিষিদ্ধ বাধা জাল, নেট বাধা জাল, বেহুন্দি জাল, ছোট ফাসের কারেন্ট জাল, চরগড়াসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ জাল দিয়ে উপজেলার কচা, কালীগঙ্গা, সন্ধা, গাবখান, চিরাপাড়া নদীতে ফেলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বংশ ধ্বংস করছে। যার মধ্যে ইলিশের জাটকা, চিংড়ি মাছের রেনু, পোয়া, তপসী, টেংরা, রিডা, আইড়, পাঙ্গাস, কাচকি, চাপিলা, ভাটা, ঢেলা, বায়লা, পুঁটি, পাবদা, ভেদা বাইম মাছের ডিম ও রেনুসহ জলজ কাছিম, কুচিয়া, শাপলাপাতা প্রজাতির বংশ ধ্বংস হচ্ছে এইসমস্ত জালে আটকা পড়ে। 

প্রতিদিন জেলেরা কয়েকশত মণ এই জাতীয় রেনু পোনা ও অন্যান্য জলজ প্রানী বংশ নিধন করে ফেলে দিচ্ছে নদীতে। বাছাইকৃত গুড়া মাছগুলো প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিনই বিক্রি করছে জেলেরা। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলেরা জানান, বাধা, নেট বাধা, চরগড়া এবং ব্যাস জালে সামনে যা কিছু আটকা পড়ে তা সবই মরে যায়। আমরা শুধু ছোট ছোট মাছগুলোকে আলাদা করে গুড়া মাছ আকারে বিক্রি করে থাকি। বাকিগুলো আবার নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

জেলেদের এই সমস্ত নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ নিধন করার ফলে দেশীয় প্রজাতির অনেক সুস্বাদু মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। অন্যদিকে, সরকার বিভিন্ন দিবস পালন করে ইলিশ মাছ সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রক্ষার জন্য নৌ-পুলিশ, কোষ্টগার্ড, থানা পুলিশ, মৎস অফিস, নৌ-বাহিনী, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন এদেরকে সংশ্লিষ্ট করেও লাখ লাখ টাকা ও চাল জেলেদের ভর্তুকি দিয়েও দূর্নিতীবাজদের কারণে সফলতা পাচ্ছেনা।  

গতকাল কালীগঙ্গা নদী থেকে ক্যামেরায় ধারণ করা ছবিতে দেখা যায়, দিনের বেলায় ৩০-৪০টি নিষিদ্ধ বাধা জাল ও নেট জাল পেতে জেলেরা মাছ নিধন করছে। অথচ জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন গাড়ি কিংবা নৌযান নিয়ে অভিযান করলে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই এদেরকে আটক করা সম্ভব। 
 
অবৈধ জাল দিয়ে মাছ নিধন করার বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এদেরকে বিভিন্ন সময় জানালেও তারা ব্যবস্থা নেওয়া হবে বললেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

এ ব্যাপারে কাউখালী নৌপুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোঃ জামসেদ আলী বলেন, আমাদের নৌযান নাই। ভাড়া নেওয়া নৌযান নিয়ে মাঝে-মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

উপজেলা মৎস কর্মকতা হাফিজুর রহমানকে কয়েকবার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।  

কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার সুলতানা বলেন, নদীতে অবৈধ জাল পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

জেলা মৎস কর্মকর্তা আঃ বারী জানান, আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। তবে কালীগঙ্গায় বা অন্য কোথাও অবৈধ জাল পাতা হলে আগামী দিন আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে।