টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের চকতৈল পূর্বপাড়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর দুই ছেলে শিশু ও মা হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন মনিরা বেগমের মা আবেদা বেগম।
গত শনিবার (৬ মে) সন্ধায় খবর পেয়ে দেলদুয়ার থানা পুলিশ মা ও দুই ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করে। নিহতরা হলেন- দেউলী ইউনিয়নের শাহেদ মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম( ২৭) ও তাদের দুই ছেলে মুসফিক (৫) এবং মাশরাফি (২)।
এলাকাবাসী জানায়, মো. শাহেদ মিয়া ওই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ফজলু মিয়ার ছেলে। তিনি একজন মাদকাসক্ত। নেশার টাকার জন্য মাঝে মধ্যে বাড়ির লোকজনের উপর অত্যাচার করত। শনিবার বিকালে শাহেদ তার বাড়ির আশপাশের লোকজনকে ডেকে জানায় তার স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
লোকজন এগিয়ে আসার আগেই তিনি পালিয়ে যান। পরে প্রতিবেশিরা এসে ঘরের দরজা ভেঙে দেখতে পান শাহেদের স্ত্রী মনিরা বেগমের পা মাটিতে ঠেকানো এবং ধর্ণার (আড়া) সাথে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝোঁলানো। পাশেই বিছানায় শিশু দুটির নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, শাহেদ মিয়া তার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করে পালিয়েছে।
দেউলী ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান তাহমিনা হক জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে চকতৈল গ্রামের মো. শাহেদের বসতঘর থেকে তার স্ত্রী মনিরা বেগম, দুই ছেলে মুশফিক ও মাশরাফির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মনিরার মরদেহ ঘরের ধর্ণার (আড়ার) সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং দুই ছেলের লাশ বিছানার ওপর পড়ে ছিল। খবর পেয়ে দেলদুয়ার থানা পুলিশ মরদেহ তিনটি উদ্ধার করেছে।
তবে একসঙ্গে দুই ছেলেকে হত্যা করে মায়ের আত্মহত্যা নাকি তাদেরকে অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তি হত্যা করেছে এ নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহত মনিরা বেগমের স্বামী মো. শাহেদ মিয়া পলাতক। মনিরা বেগমের বাবার বাড়িও ওই গ্রামে।
মনিরা বেগমের বড় ভাই আল আমিন জানান, শাহেদ নিজে মাদকাসক্ত। তারা ধারণা করছেন, ঘরের ভেতর স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যা করে শাহেদ সিঁধ কেটে ঘর থেকে বের হয়ে পালিয়ে গেছেন।
দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনজনের মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।